Kode Iklan atau kode lainnya

আমরা বাঁচতে চাই: পশ্চিমবঙ্গ সরকার, শিক্ষা দপ্তর, SSC, পুলিশ প্রশাসন ও সর্ব সাধারণের উদ্দেশ্যে খোলা চিঠি

 কর্মশিক্ষা-শারীরশিক্ষা

নিউজ ডেস্ক: আমি সাফিয়া খাতুন এস.এস.সি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ কর্মশিক্ষা-শারীরশিক্ষা সংগঠনের সম্পাদিকা এবং শারীরশিক্ষা বিষয়ের একজন সুপারিশপত্র প্রাপক চাকরিপ্রার্থী।

আগামী ১০ ই আগস্ট ২০২৩ সুপ্রিম কোর্টে "সন্দীপ প্রসাদ" মামলার হিয়ারিং এর জন্য যে ট্রেনটেটিভ ডেট আছে সেটাকে কনফার্ম ডেট করিয়ে হেয়ারিং করাতে হবে এবং বঞ্চিত বেকার চাকরিপ্রার্থীদের প্রত্যেককে অবিলম্বে স্কুলে জয়েন করাতে হবে। 

অন্যদিকে কলকাতা হাইকোর্টে ১১ ই আগস্ট ২০২৩ "মীনাক্ষী ঘোষ" মামলার যে হেয়ারিং আছে সেদিন যেন Supernumerary post এ নিয়োগের আর কোন বাধা বিপত্তি না থাকে। কোন পোস্টে কিভাবে নিয়োগ দিবেন সেটা আপনাদের ব্যাপার কিন্তু আমরা আমাদের প্রাপ্য অধিকার ফিরে পেতে চাই। এই উদ্যোগ রাজ্য সরকারকে'ই নিতে হবে, এই দুটো দিনের মধ্যে। আর যদি এই দুটো দিনে হিয়ারিং না করে আমাদের সমস্যা সমাধান না করা হয়। তাহলে আগামী দিন পশ্চিমবঙ্গবাসী দেখবে ধ্বংসাত্মক আন্দোলন, মৃত্যু মিছিল..! 

আমরা একা মরবো না যারা যারা এতদিন আমাদের নিয়োগের জন্য বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং যাদের কারণে আমাদের পরিবার-পরিজন অনেকেই আমাদের না পাওয়ার বাসনা নিয়ে এই পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেছেন, যাদের কারণে জীবন যন্ত্রণায় আজ বেঁচে থাকার কোন আগ্রহ নেই তারা প্রত্যেকে মরবে! এবার আপনাদের জীবনের সিদ্ধান্ত আপনারাই নেবেন আপনারা ডবল ডবল Z সিকিউরিটি নেবেন না হিয়ারিং করিয়ে দ্রুত আমাদেরকে আমাদের প্রাপ্য অধিকার বুঝিয়ে দিবেন।

কেন আমাদের এমন সিদ্ধান্ত? 

দীর্ঘ কয়েক বছরের সমস্ত ঘটনা এখানে বিস্তারিত বলা সম্ভব নয় তাই সংক্ষেপে বলার চেষ্টা করছি .. ২০১৬ সালের পর থেকে দীর্ঘ বঞ্চনা, লাঞ্ছনা, অপেক্ষা, আন্দোলন, অনশন ও বিক্ষোভের মধ্যে দিয়ে অবশেষে ৫ই মে ২০২২ আমাদের জন্য Supernumeray পোস্ট ক্রিয়েট করা হয় এবং ১৯ শে মে ২০২২ বিকাশ ভবন থেকে একটি লিখিত অর্ডার প্রকাশ করা হয়। তারপর দীর্ঘ টালবাহানার মধ্যে দিয়ে ১০-ই নভেম্বর থেকে ১৬ ই নভেম্বর ২০২২ আমাদের কাউন্সিলিং প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। ১৮ ই নভেম্বর ২০২২ কলকাতা হাইকোর্ট মামলা হয়। ঠিক সেই সময় হাইকোর্টের অন্য একটি কোর্টে অযোগ্যদের জন্য অতিরিক্ত কিছু ভ্যাকান্সির জন্য দাবি করা হয়। জাজমেন্টের ভিত্তিতে সেখানে রাজ্যের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির ওপরে CBI লাগু হয়।  রাজ্য সরকার ওনাকে বাঁচাতে ডিভিশন বেঞ্চ যায়, ডিভিশন বেঞ্চ সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়কে বহাল রাখে। পরবর্তীতে রাজ্য সরকার রাতারাতি সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের করেন। কিন্তু দুঃখের বিষয় যখনই কলকাতা হাইকোর্টে মীনাক্ষী ঘোষের মামলা থাকে তখন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সুপ্রিম কোর্টের সন্দীপ প্রসাদ মামলা কে দেখিয়ে বলে আমাদের এই বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি সিমিলার মামলা আছে ওখানে কি হচ্ছে দেখে এখানে হেয়ারিং করাবো। একই কারণ দেখিয়ে নভেম্বর ২০২২ থেকে আজ জুলাই ২০২৩ শেষ আর মাত্র একটি দিন বাকি। কলকাতা হাইকোর্টে রাজ্য সরকার/রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল ইচ্ছাকৃতভাবে হেয়ারিংটা করায় না। অন্যদিকে সুপ্রিম কোর্টে হেয়ারিং তো দূরের কথা, হিয়ারিং এর জন্য মেনশন করিয়ে ডেটটাও কনফার্ম করা হয় না। আজ আর জানতে ইচ্ছে করে না লক্ষ লক্ষ টাকা বেতনের এডভোকেট জেনারেল, সুপ্রিম কোর্টের টপ র‍্যাংকের উকিল গুলো কার নির্দেশে এখনো হাত-পা গুটিয়ে বসে আছেন। মনে প্রশ্ন জাগে চাকরিটা শেষমেষ পাবো তো? এতগুলো বঞ্চিত বেকার ছেলে-মেয়ের ভবিষ্যৎ কি হবে? যারা আজও রাস্তায় বসে আছে তাদের কি হবে, তারা কবে সুসম্মান নিয়ে ঘরে ফিরবে? শিক্ষা ব্যবস্থার এই বেহাল দশা ফিরিয়ে আনার দায়িত্বটা কে নেবে? স্কুলে যারা শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাবে দিনের পর দিন বঞ্চিত হচ্ছে তারা কি কখনো তাদের প্রাপ্য অধিকার ফিরে পাবে? নাকি আরো একটি প্রজন্ম শিক্ষার অভাবে কর্মসংস্থানের অভাবে সস্তার রাজনীতি করতে গিয়ে একই বাড়িতে চারজন প্রার্থী হতে গিয়ে/হয়ে হিংসার রাজনীতিতে জড়িয়ে অকালে মৃত্যু বরণ করবে ! আর মহারাজার বেশধারী কিছু নেতা নেত্রী, মহারানী ক্ষমতার অপব্যবহার করে শাসন ভার সামলাবে।

আন্দোলন করতে গিয়ে একাধিক বার আমাদেরকে আটক, এরেস্ট করা হয়েছে এবং পরবর্তীতে প্রত্যেকের নামে অনেকগুলো ধারাই কেস দেয়া হয়েছে.. এমনকি আমাদেরকে চার দিনের জন্য প্রেসিডেন্ট জেলে বন্দি জীবনও কাটাতে হয়েছে। কিন্তু চাকরিটা এখনো অধরাই থেকে গেল! সেই কেস গুলো তো রাজ্য সরকারের মেটানো উচিত তাও মেটায় না।

আমরা আজ নিরুপায়.. দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে এক পা আগানোর কোন জায়গা নেই। আমাদের না আছে কোন মান সম্মান না আছে মানসিক শান্তি না আছে সামাজিক স্বীকৃতি। তাই বাধ্য হয়ে এমন সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে।

দয়া করে বাড়িতে পুলিশ পাঠাবেন না। ক্ষমতাটা সঠিক জায়গায় ব্যবহার করুন। তাহলে দেখবেন চেয়ার নিয়েও ভাবতে হবে না আর সি বি আই এর চার্জশিটে নাম আসার পর নিরুদ্দেশ হতে হবে না।

বিরোধী রাজনৈতিক দল ও অ্যাডভোকেট (হাইকোর্ট, সুপ্রিম কোর্ট) আপনাদের উদ্দেশ্যে বলতে চাই এই বেকার চাকরিপ্রার্থীদের স্বার্থে ,সুষ্ঠু  সমাজ গঠনের স্বার্থে, সমাজের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সুষ্ঠুভাবে গঠনের স্বার্থে, অনেক তো হলো এবার একটু থামুন। দয়া করে আমাদের নিয়ে আর রাজনীতি করবেন না।

এরপরে চাকরি না হবার কারণে যদি একজনেরও মৃত্যু হয় সে চাকরিপ্রার্থী হোক বা অন্যান্য ব্যক্তিত্ব তার সম্পূর্ণ দায় রাজ্য সরকারকে নিতে হবে।

আমি মোঃ সালমান সেখ সাংগঠনের কো-অর্ডিনেটর ও আমি মাহফুজুর রহমান সংগঠনের সভাপতি দুজনে বৃহৎ স্বার্থের কথা ভেবে সাংগঠনিক সিদ্ধান্ত হিসেবে এ প্রস্তাবকে সমর্থন জানালাম।

                         ধন্যবাদ..l


close