নিউজ ডেস্ক: প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে ব্যাপক বেনিয়ম করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলে মামলা করা হয়। এই নিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে রিপোর্ট চান বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। NCTE-র গাইডলাইন না মেনে কী করে প্রশিক্ষণ ছাড়া চাকরি করছেন ৫,০০০ প্রাথমিক শিক্ষক? জবাবদিহি করে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে রিপোর্ট পেশ করতে নির্দেশ দেন বিচারপতি।
রাজ্যে ব্রিজ কোর্স করানো হচ্ছে না ন’বছর যাবৎ। মঙ্গলবার প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ সংক্রান্ত মামলায় হাইকোর্টে রিপোর্ট দিয়ে জানাল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। ওই রিপোর্টে পর্ষদের ডেপুটি সেক্রেটারি রিপোর্টে উল্লেখ করেছে, ২০১৫ সালে শেষবার প্রাথমিকের শিক্ষকদের ছ’মাসের ব্রিজ কোর্স করানো হয়। তারপর থেকে এই কোর্স আর করানো হয়নি।
যদিও এই কোর্স জরুরি উল্লেখ করে হাইকোর্টে মামলা দায়ের হয়েছিল। প্রাথমিকের শিক্ষকের জন্য প্রশিক্ষণ কোর্স করা বাধ্যতামূলক। প্রাথমিকে শিক্ষকতার জন্য ডিএড বা ডিএলএড কোর্স জরুরি। আগের নিয়ম অনুযায়ী, বিএড প্রশিক্ষিতরাও প্রাথমিকের শিক্ষক পদে চাকরি পেলেও চাকরি পাওয়ার একবছরের মধ্যে ছ’মাসের একটি ব্রিজ কোর্স করা বাধ্যতামূলক। কিন্তু তা না করেই বহু শিক্ষক এখনও চাকরি করছেন বলে অভিযোগ। রিপোর্টের প্রেক্ষিতে মামলাকারীদের কাছে হলফনামা চেয়েছে আদালত।
কলকাতা হাইকোর্টে ৭ জন প্রাথমিকের চাকরিপ্রার্থী মামলা দায়ের করেছেন। ২০২০ সাল থেকে ওই শিক্ষকরা চাকরি করছেন বলে জানিয়েছিলেন মামলাকারীদের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি।
মামলাকারীরা অভিযোগ করেন, তাঁদের প্রশিক্ষণ থাকলেও নিয়োগ জোটেনি, অথচ প্রশিক্ষণ ছাড়াই চাকরি করছেন ৫,০০০ শিক্ষক। এরা প্রত্যেকে বিএড ডিগ্রিধারী। কিন্তু NCTE-র গাইডলাইন অনুসারে এরা কেউ এখনো ৬ মাসের ব্রিজ কোর্স করেনি। তার পরেও এদের বেতন দিয়ে চলেছে রাজ্য সরকার।
এব্যাপারে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
NCTE-র নিয়ম অনুযায়ী B.ED প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত শিক্ষকদের ছয় মাসের একটি ব্রিজ কোর্স করতে হয়। যদিও তা করানো হয়নি। এই অবস্থায় ফের মামলার সম্মুখীন হতে হল শিক্ষকদের। পূর্ণ প্রশিক্ষণ না থাকার কারণে এই শিক্ষকদের চাকরি প্রশ্নের মুখে পড়ছে। কলকাতা হাইকোর্ট প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের কাছে রিপোর্ট তলব করে।
এই নিয়ে মামলাকারীদের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তিওয়ারি জানান, ২০২০ সালে প্রায় ১৬,৫০০ শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছিল প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। সেখানে DlED প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা ছাড়া BED ডিগ্রিধারীরাও আবেদন করতে পারবেন বলে জানানো হয়। এরকম প্রায় ৫,০০০ বিএড ডিগ্রি ধারীকে নিয়োগ করে পর্ষদ। কিন্ত NCTE-র গাইডলাইন অনুসারে এদের ৬ মাসের ব্রিজ কোর্স করা বাধ্যতামূলক। যা এখনো সম্পূর্ণ করেননি তাঁরা। পর্ষদের রিপোর্ট গ্রহণযোগ্য মনে না হলে এদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিতে পারে আদালত।