নিউজ ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরগরম রাজ্য। কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশে চলছে সিবিআই তদন্ত। ২০১৪ সালের পর প্রাথমিকে শিক্ষকপদে যোগ দেওয়া শিক্ষকদের তথ্য সংগ্রহ করছে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ।
কোচবিহার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো প্রাক্তন মন্ত্রী হিতেন বর্মনকে। আপাতত তাঁর জায়গায় দায়িত্ব সামলাবেন জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক)। দুদিন আগের এই নির্দেশ আজ প্রকাশ্যে আসতেই শোরগোল পড়েছে কোচবিহার জেলার রাজনীতিতে। প্রাথমিকে নিয়োগে তদন্তের মধ্যেই কোচবিহার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যানকে রবিবার আচমকা সরিয়ে দেওয়ার বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয় রাজ্য সরকারের তরফে। তাতে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
গত ২০ জুন রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা দপ্তরের পর্যদ সচিবের তরফে চিঠি দিয়ে জেলা প্রাথমিক বিদ্যালয় সংসদকে বলা হয়, ২০১৪ সালের যারা টেট উত্তীর্ণ যাদের প্রাথমিকে নিয়োগপত্র দেওয়া হয়েছিল তাদের প্রত্যেকের আসল নথিপত্র চেয়ে পাঠান। এরপরেই সদ্য পদ হারানো চেয়ারম্যান তথ্য প্রাক্তন বনমন্ত্রী হিতেন বর্মণ মন্তব্য করেছিলেন, আমাদের কাছে নির্দেশ এসেছিল, সেই মতো জেলার সমস্ত এসআই-কে মেল করে দ্রুত কাগজপত্র পাঠাতে বলেছি। এরপরেই তিনি মন্তব্য করেন, সেই সময়ে যারা দায়িত্বে ছিলেন তারা সমস্ত কাগজ ভেরিফাই করেই নিয়োগপত্র দিয়েছিলেন। তবে সমস্ত তথ্য আমাদের কাছে নেই।
পাশাপাশি নিয়োগপত্র দেওয়ার সময় টেট পাশ করার সার্টিফিকেট দেখা বাধ্যতামূলক ছিল- না। নিয়োগপত্র দেওয়ার জন্য শুধু মার্কশিট, অ্যাডমিট কার্ড এসব ভেরিফাই করা হয়েছিল। হিতেন বর্মণের কথায় স্পষ্ট, ২০১৪ টেট উত্তীর্ণ যারা নিয়োগপত্রই পেয়েছেন, তাদের সব নথি ফাইলে নেই। বর্মণ জানিয়েছিলেন, টেট কোয়ালিফায়েডর সবাই অ্যাডমিট কার্ড এবং তাদের যোগ্যতা সংক্রান্ত নথিপত্র জমা দেননি। এমনিক জয়েনিং রিপোর্টও নেই। তিনি এও জানিয়েছিলেন জেলা দপ্তরে ২০১৪ সালে টেট উত্তীর্ণ কতজনকে জেলায় নিয়োগ দেওয়া হয়েছে সেই হিসাবও নেই।
এই বক্তব্যের পরেই প্রশ্ন ওঠে সেই সময়ে যিনি চেয়ারম্যানের পদে ছিলেন। তারা অ্যাপয়েন্টমেন্ট দেওয়ার সময় নিয়ম মেনে কেন কাজ করেননি? এই প্রশ্নের মধ্যেই লুকিয়ে আছে হিতেনবাবুর পদ হারানোর রহস্য। ইতিমধ্যে প্রথম ধাপে যে ২৬৯ জন চাকরি থেকে বরখাস্ত হয়েছে, তার মধ্যে এই জেলায় ৩২ জন আছে। হিতেন বর্মণ প্রকাশ্যে মুখ খুলেই কি পদ খোয়ালেন?