Kode Iklan atau kode lainnya

শিক্ষামন্ত্রী উৎসশ্রী উদ্বোধন করবেন ৩১শে জুলাই, আবেদন শুরু ২রা আগস্ট, উৎসশ্রী পোর্টালের নিয়মনীতিতে হতাশ ও ক্ষুব্ধ শিক্ষক-শিক্ষাকর্মীরা


নিউজ ডেস্ক: দূরবর্তী স্থানের ও অন্য জেলার শিক্ষকদের বাড়ির কাছাকাছি ট্রান্সফার দেওয়ার জন্য মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর পূর্ব ঘোষণা মতোই "উৎসশ্রী" ট্রান্সফার পোর্টাল আগামী ৩১শে জুলাই শিক্ষামন্ত্রীর হাতে সূচনা হতে যাচ্ছে। মাননীয়া  মুখ্যমন্ত্রী নবান্নে  উৎসশ্রী বিষয়ে ঘোষণা করার পরেই শিক্ষা দপ্তরে এই অনলাইন জেনারেল ট্রান্সফার পোর্টাল নিয়ে তৎপরতা লক্ষ্য করা যায়। মাস খানেক ধরে স্পেশাল ট্রান্সফার প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় স্বাভাবিক ভাবেই উদ্বিগ্ন রাজ্যের হাজার হাজার বদলিপ্রার্থী। কয়েক মাস ধরে অনলাইন মিউচুয়াল ট্রান্সফারও বন্ধ হয়ে আছে। উৎসশ্রী সূচনার আগে গত কয়েক দিন ধরে বিভিন্ন ডিআই স্কুলগুলির সাথে গুগল মিটে এই  ট্রান্সফারের পদ্ধতি ও স্কুলের করনীয় বিষয়গুলি নিয়ে মিটিং চলছে। স্কুলের পক্ষ থেকে আইওএসএমএস পোর্টালের মাধ্যমে টিচারদের ট্রান্সফারের অনুমোদন বিষয়ে ট্রেনিং দেওয়া চলছে কয়েক দফায়। গতকাল শিক্ষা সচিব মনীষ জৈন একটি নোটিফিকেশন মাধ্যমে উৎসশ্রী সূচনার কথা জানান।  

এই নির্দেশ অনুযায়ী, আগামী ২রা আগস্ট টিচাররা এই পোর্টালের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবে। ট্রান্সফার সংক্রান্ত সমস্ত নিয়ম ও আবেদন পদ্ধতি সূচনার দিনেই প্রকাশিত হবে বলে শিক্ষা দপ্তর থেকে জানা যাচ্ছে। তবে উৎসশ্রী চালু হলেও এই পোর্টালেও নন টিচিং দের আবেদনের সুযোগ দেওয়া না হওয়ায় তারা অত্যন্ত হতাশ ও ক্ষুব্ধ। গত অক্টোবর মাসে অনলাইন মিউচুয়াল ট্রান্সফার পোর্টাল শুরু হলেও দীর্ঘ ৯ মাস হলেও  শিক্ষাকর্মীরা আজ পর্যন্ত আবেদনের সুযোগ পাচ্ছে না। তারা জোটবদ্ধ হয়ে খুব শীঘ্রই আইনি পথে সমাধানের জন্য অগ্রসর হচ্ছে। এদিকে উৎসশ্রীতেও তাদের সুযোগ দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন এবিষয়ে আবেদন ও ডেপুটেশন দিলেও  শিক্ষা দপ্তর কোন সমাধান করেনি। এছাড়াও, উৎসশ্রী তে আরো অসঙ্গতি নিয়ে সমাধান চেয়ে  ইতিমধ্যেই বারবার শিক্ষামন্ত্রী, কমিশনার ও শিক্ষা সচিবকে বহু শিক্ষক সংগঠন স্মারকপত্র জমা দিয়েছে। এছাড়াও এই পোর্টালে বহু সমস্যা রয়েছে। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী অন্য জেলার শিক্ষকদের নিজের জেলায় ট্রান্সফার দেওয়ার কোন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। নিজের জেলায় ট্রান্সফারের জন্য বাড়তি নম্বর দেওয়ার দাবি করেছে শিক্ষক মহল। ভোটের আগে সমস্ত এপ্রুভড টিচারকে জেনারেল ট্রান্সফার দেওয়া হলেও উৎসশ্রীতে তাদের আবেদনের সুযোগ নেই, সকল ২বছর চাকরি মেয়াদ উত্তীর্ণ টিচারদেরকে আবেদনের সুযোগ দেওয়ার দাবিও উঠেছে। আবার এনওসি, সিঙ্গল টিচার, জুনিয়র হাইস্কুলের টিচারদের সুযোগ, সেকসেন সমস্যা সহ বিবিধ সমস্যা সমাধানের দাবি জানাচ্ছে শিক্ষকরা। নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বাধ্যতামূলক হওয়ায় ও স্কুলের ১০% শিক্ষক আবেদনের সুযোগ পেলে বহু দূরবর্তী শিক্ষক আবেদনের সুযোগ পাবে না বলেই ক্ষোভ প্রকাশ করছে। এই আবেদনের সংখ্যা ২৫% করার দাবি জানিয়েছে বেশীরভাগ শিক্ষক সংগঠন । টিচারদের ছাড়ার ক্ষমতা স্কুলের হাতে দেওয়ায় স্বজনপোষণ বাড়বে ও সুযোগ হারাবে যোগ্যরা। " অল পোস্ট গ্ৰ্যজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন "নামে শিক্ষক

সংগঠনের পক্ষ থেকে শিক্ষা দপ্তরকে "উৎসশ্রী" পোর্টালে সংশোধন বিষয়ে দশদফা আবেদন জানানো হয়েছে:

(১) মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর  পূর্বঘোষণা মতো অনলাইনে ডিস্ট্রিক্ট ট্রান্সফার বাস্তবায়নে অবিলম্বে "উৎসশ্রী " বা অনলাইন জেনারেল ট্রান্সফার পোর্টালে ভিন্ন জেলায় চাকুরীরত শিক্ষকদের জন্য বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার জন্য পোর্টালে অতিরিক্ত 5 নম্বর বরাদ্দ ও অন্য জেলার একটি অপশন যুক্ত করতে হবে। ' উৎসশ্রী'পোর্টালে বহু টিচার ৫ বছরের অধিক ২০০-৭০০ কিমি দূরে চাকরি করলেও ট্রান্সফার পোর্টালে আবেদনের সুযোগ নাও পেতে পারে। 

(২) অনলাইন জেনারেল ট্রান্সফারে দূরত্ব ও অভিজ্ঞতাকে যোগ্যতামান বিবেচনা করে যথাযথ ও সুষ্ঠু নোটিফিকেশন প্রকাশ করে অনলাইন জেনারেল ট্রান্সফার মাধ্যমে সকল শিক্ষক, শিক্ষিকা, প্রধান শিক্ষক শিক্ষিকা,শিক্ষাকর্মী ও লাইব্রেরিয়ানদেরকে স্বচ্ছতার সাথে জেনারেল ট্রান্সফার দিতে হবে। 

(৩) অনলাইন জেনারেল ট্রান্সফারে সকল APPROVED শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের আবেদনের সুযোগ দিতে হবে। 

 (৪)  গতবছর অনলাইন মিউচুয়াল পোর্টাল চালু হলেও দীর্ঘ ৯ মাস অতিক্রান্ত হলেও শিক্ষাকর্মী ও লাইব্রেরিয়ানদের আবেদনের সুযোগ নেই । অতিসত্বর অনলাইন মিউচুয়াল ট্রান্সফার প্রোর্টালে শিক্ষাকর্মী ও লাইব্রেরিয়ানদের আবেদনের অপশন চালু করতে হবে। 

(৫) অনলাইন জেনারেল ট্রান্সফারে সেকশন সেকশন ট্রান্সফার বাতিল করে পোস্ট ও সাবজেক্ট অনুসারে ট্রান্সফার দিতে হবে। 

(৬) উৎসশ্রী আবেদনে NOC অর্থাৎ নো অবজেকশন সার্টিফিকেট বাতিল করতে হবে। কোনভাবেই NOC এর জন্য স্কুলে স্বজনপোষণ ও আর্থিক লেনদেনের ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনা যাবে না। 

(৭) একাধিকবার মিউচুয়াল ট্রান্সফারের নোটিফিকেশন প্রকাশ করতে হবে। শিক্ষক, শিক্ষিকা ও শিক্ষাকর্মীরা একাধিকবার মিউচুয়াল ট্রান্সফার নিলে স্কুল ও প্রশাসনিক ভাবে কোন সমস্যা হয় না। এই পোর্টালে যারা মিউচুয়াল নিয়েছে তাদেরকে ৫ বছর আবেদন থেকে বিরত রাখা হয়েছে। 

(৮) জুনিয়র হাইস্কুল ও উচ্চ মাধ্যমিক (HS SECTION) বিভাগের শিক্ষক শিক্ষিকাদেরকে অনলাইন জেনারেল ট্রান্সফারে আবেদনের সুযোগ দিতে হবে। দীর্ঘকাল ও দূরবর্তী স্থানে চাকরি করায় তাদেরকে " SINGLE TEACHER " আখ্যা দিয়ে আবেদনের সুযোগ থেকে কোনভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না। ট্রান্সফারের পর ভেকেন্সি হলেও টিচার নিয়োগ করবে রাজ্য সরকার, ফলে সমস্যা হবে না কোন স্কুলের। 

(৯) জেনারেল ট্রান্সফারে সবাইকে আবেদনের সুযোগ দিতে হবে, নির্বাচিতদের মধ্যে হাইস্কুলে Rank অনুসারে 25% ও জুনিয়র হাইস্কুলে 50%  রিলিজ দেবে স্কুল। 25% আবেদনের সুযোগ না দিলে বহু টিচার আবেদনের সুযোগ পাবে না। 

(১০) গত একবছর ধরে অনার্স পিজি পোস্টের মধ্যে ট্রান্সফার হলেও "সেকশন সমস্যা" আখ্যা দিয়ে যোগ্য শিক্ষক শিক্ষিকাদেরকে এক পোস্ট, বেতন কাঠামো , স্কেল ও সাবজেক্টে ট্রান্সফারের নিয়ম বলবৎ করতে হবে জেনারেল ও মিউচুয়াল ট্রান্সফার পোর্টালে। সেকশনে সেকশনে জেনারেল ট্রান্সফার নিয়ম বাতিল করতে হবে। 

শিক্ষক সংগঠন "অল পোস্ট গ্ৰ্যজুয়েট টিচার্স ওয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন" এর সম্পাদক চন্দন গরাই বলেন, "মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা মতো অনলাইন জেনারেল ট্রান্সফারে ভিন্ন জেলা ও দূরবর্তী স্থানের শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বাড়ির কাছাকাছি ট্রান্সফারের সুযোগ উৎসশ্রীতে না দেওয়া এই পোর্টালের নিয়মনীতির বিরুদ্ধে শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীরা আন্দোলনে নামবে। দীর্ঘ নয় মাস অতিক্রান্ত হলেও শিক্ষাকর্মীদের অনলাইন  মিউচুয়ালে সুযোগ নেই, জুনিয়র ও উচ্চ মাধ্যমিক টিচারদের আবেদনের সুযোগ দিতে হবে,  এনওসি বাতিল করে ভেরিফিকেশন সিস্টেম আনতে হবে, স্কুলে আবেদনের সুযোগ বৃদ্ধি করতে 25% করতে হবে এবং ২বছর চাকরির মেয়াদ উত্তীর্ন সকলকেই আবেদন করতে দিতে হবে। উৎসশ্রীর নিয়ম করা হয়েছে আমলাতান্ত্রিক ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য।"

close