অযোগ্য শিক্ষক: রাজ্যে একের পর এক নিয়োগ দুর্নীতির ঘটনা সামনে এসেছে। এই অবস্থায় বেআইনি বা সন্দেহজনক নিয়োগ খুঁজতে প্রধান শিক্ষকদের নির্দেশ দেওয়া হল। এই নিয়ে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সব জেলার স্কুল পরিদর্শকদের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল কমিশনারের অফিস থেকে। ওই চিঠিতে জেলা স্কুল পরিদর্শকদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল, কোথাও কোনও বেআইনি বা সন্দেহজনক নিয়োগ রয়েছে কি না তা খুঁজে বের করতে হবে। ১০ দিনের মধ্যে সেই কাজ শেষ করে একটি রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
বেআইনি নিয়োগ খুঁজতে সম্প্রতি স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান, মধ্য শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি ও স্কুল শিক্ষার কমিশনার বৈঠকে বসেছিলেন। সেই বৈঠকের পরই সব জেলার স্কুল পরিদর্শকদের কাছে একটি চিঠি পাঠানো হয়েছিল কমিশনারের অফিস থেকে।
চিঠিতে বলা হয়েছে, 2022 সালের WPA 24451-এ পাস হওয়া 21.02.2024 তারিখের মাননীয় হাইকোর্টের আদেশ মেনে, WBCSSC-এর চেয়ারম্যান, WBBSE-এর সভাপতি এবং স্কুল শিক্ষা কমিশনারকে নিয়ে গঠিত তিন সদস্যের কমিটির একটি বৈঠক 22.02.2024 তারিখে অনুষ্ঠিত হয়। তিন সদস্যের কমিটি দ্বারা সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যে সমস্ত জেলার ডিআইএস (এসই) কে আরও সন্দেহজনক বা বেআইনি নিয়োগের বিষয়ে অবিলম্বে উচ্চ কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট করার জন্য অনুরোধ করা হবে, যদি স্কুলগুলিতে এমন কোনও সন্দেহ জনক সনাক্ত করা হয় এবং/অথবা যদি এমন কোনও তথ্য তাদের কাছে থাকে। এই অবস্থায় সন্দেহজনক বা অবৈধ নিয়োগের কোনও তথ্য থাকলে, 10 দিনের মধ্যে রিপোর্ট করার জন্য অনুরোধ করা হচ্ছে।
রাজ্যে নিয়ম বহির্ভূতভাবে শিক্ষক পদ চাকরি পাওয়ার একাধিক অভিযোগ উঠে এসেছে। একাধিক ক্ষেত্রে দুই কেন্দ্রীয় সংস্থা সিবিআই ও ইডিকে তদন্ত চালাতে নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট। পাশাপাশি বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসুর নির্দেশে রাজ্যের গোয়েন্দা সংস্থা সিআইডিও আলাদাভাবে তদন্ত চালাচ্ছে।
মুর্শিদাবাদের গোথা হাইস্কুলে বেআইনি শিক্ষক নিয়োগের অভিযোগের তদন্ত চালাচ্ছে সিআইডি। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে সিআইডি। সেই তদন্তের মাঝেই রাজ্য গোয়েন্দা সংস্থার হাতে আরও অভিযোগ উঠে আসতে শুরু করেছে। বাঁকুড়া ও পূর্ব মেদিনীপুরের দু’টি স্কুলেও বেআইনি নিয়োগের অভিযোগ রয়েছে বলে দাবি করেছে সিআইডি। এরই মধ্যে সব জেলার স্কুল পরিদর্শকদের কাছে চিঠি পাঠানো হল যাতে আরও কোথাও কোনও বেআইনি বা সন্দেহজনক নিয়োগ রয়েছে কি না, সেই বিষয়ে তথ্য দেওয়ার জন্য।
এই বিষয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “যাঁরা এতদিন অবৈধ নিয়োগ প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত তাঁরাই এখন আদালতের চাপে পড়ে অবৈধ ভাবে নিযুক্তদের ধরার জন্য নিচু তলায় নির্দেশ দিচ্ছেন। এর থেকে হাস্যকর আর কি হতে পারে? এইসব অবৈধ নিয়োগের জন্য সম্পূর্ণ দায় সর্বোচ্চ আধিকারিক, নেতা-মন্ত্রীদের। সমস্ত দায় স্বীকার করে বঞ্চিতদের নিয়োগ করে প্রায়শ্চিত্ত করাই একমাত্র পথ। এর দায় সম্পূর্ণ ভাবে ঊর্ধ্বতন আধিকারিক এবং নেতা-মন্ত্রীদের নিতে হবে। বিদ্যালয় প্রধানগণ এ ব্যাপারে কোন তথ্য জানেন না। তাই তাঁদের এই তথ্য দেওয়ার কোন দায় নেই। এই তথ্য তাঁরা দিতে পারেন না।”