Kode Iklan atau kode lainnya

অযোগ্যদের জন্য মর্মাহত মুখ্যমন্ত্রী, আর যারা যোগ্য হয়েও নিয়োগ না পেয়ে আত্মহত্যা করেছে তাদের বেলা…

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়

নিউজ ডেস্ক: নজিরবিহীন দুর্নীতি কাণ্ডে চাকরি যাচ্ছে অযোগ্যদের। প্রায় প্রতিদিনই অযোগ্যদের নামের তালিকা ভাইরাল হচ্ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে এবার মুখ খুললেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার জেলা আদালতের একটি অনুষ্ঠানে গিয়ে বিচারপতিদের এ বিষয়ে চিন্তাভাবনা করার আবেদন জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কোথাও কোনও ভুল হয়ে থাকলে, চাইলেন তা সংশোধনের সুযোগও। 

মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ‘‘আমি বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায়ের একটি রায় শুনেছিলাম। চাকরি নিয়ে মামলার রায়ে তিনি বলেছিলেন, ‘যদি ভুল থাকে সংশোধন করে নাও।’ উনি চাকরি খাওয়ার কথা বলেননি।’’

মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, “নিচুতলায় কেউ অন্যায় করে থাকলে তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিন। কিন্তু কথায় কথায় চাকরি খাবেন না”। আলিপুর জজ কোর্টে ঋষি অরবিন্দের ১৫০তম জন্ম বার্ষিকীর অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই এই মন্তব্য করেন মুখ্যমন্ত্রী।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আমি ক্ষমতায় এসে একজনও সিপিএম ক্যাডারের চাকরি খাইনি। তোমরা কেন খাচ্ছ? ‘কালকেও দু’জন আত্মঘাতী হয়েছেন। হঠাৎ করে চাকরি চলে গেলে খাবে কী? চাকরি পাওয়ার পর কেউ হয়তো বিয়ে করে সংসার করছেন, তাঁর চাকরিটা চলে গেলে তো অথৈ জলে পড়তে হবে। কারও হয়তো অসুস্থ, বাবা-মা সন্তানের চাকরির উপর নির্ভরশীল ছিলেন। তাঁদের কী হবে?’

মমতা বলেন, ‘‘আমরা তো আইনজীবীদের উপর নির্ভর করি। বিচারপতিদের রায়কে সম্মান জানাই। আমি অধিকার কাড়ার পক্ষে নই। আমি অধিকার দেওয়ার পক্ষে। যেটা আইনত স্বীকৃত, সেই অধিকারের কথা বলছি। আমি যদি অন্যায় করি, আপনারা গালে দুটো চড় মারুন। আমি কিচ্ছু মনে করব না। যদি আমি দেখি, ‘ইয়েস আমি গিল্টি।’ আমি জীবনে জেনেশুনে কোনও অন্যায় করিনি। আমি ক্ষমতায় আসার পর একটাও সিপিএম ক্যাডারের চাকরি খাইনি। তা হলে তোমরা কেন খাচ্ছ? দেওয়ার ক্ষমতা নেই। কাড়বার ক্ষমতা আছে!’’

ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন হাইকোর্টের বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। তাঁর সামনেই মুখ্যমন্ত্রী তাৎপর্যপূর্ণ ভাবেই বলেন, ‘আমি প্রধান বিচারপতিকে পেলাম না, সুব্রত দা (বিচারপতি সুব্রত তালুকদার) পেলাম। ওনাকেই আমার মনের কথা বলে গেলাম। যাঁদের চাকরি যাচ্ছে, আইন অনুযায়ী তাঁদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া যায় কিনা দেখা যেতে পারে। তাঁদের কোনও পরীক্ষায় বসতে দেওয়া যায় কিনা, বা অন্য কিছু করা যায় কিনা তা দেখা যেতে পারে।”

দৃশ্যতই কিছুটা ভারাক্রান্ত মুখ্যমন্ত্রী বলেন, গতকাল উত্তরবঙ্গে দু’জন আত্মহত্যা করেছে। খবরটা দেখে মনে খুব দুঃখ হয়েছে। আমি একটা কথাই বলব, দরকারে আমায় ধরে মারুন, কিন্তু ছাত্র-যৌবনের খাওয়ার অধিকার কেড়ে নেবেন না।’

এই নিয়ে শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের সাধারণ সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “চূড়ান্ত দুর্নীতির মাধ্যমে নিযুক্তদের চাকরি চলে যাওয়ার জন্য মুখ্যমন্ত্রী অত্যন্ত মর্মাহত কিন্তু যারা যোগ্যতার পরীক্ষা দিয়ে পাশ করে প্রায় দু বছর রাস্তায় পড়ে রয়েছে, যারা বিপন্ন, অনেকেই আত্মহত্যা করেছে তাদের নিয়োগের ব্যাপারে কোন উদ্বেগ নেই! মর্মাহত হওয়ার আসল কারণ নেতা, মন্ত্রীদের দুর্নীতিকে আড়াল করা নয় কি? দুর্নীতির সমস্ত মাথাদের কঠোর শাস্তি চাই। সমস্ত যোগ্য বঞ্চিত চাকরিপ্রার্থীদের অতি দ্রুত নিয়োগ করা হোক।”

close