Kode Iklan atau kode lainnya

অপদার্থতা, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দুর্নীতি ও অসদাচরণের জন্য বিখ্যাত: অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

  টেট অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়

নিউজ ডেস্ক: প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে তীব্র আক্রমণ করলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়প্রাথমিকের টেট দুর্নীতির নানা টালবাহানার জন্য যদি পরীক্ষার্থীর বয়স পেরিয়ে গিয়ে থাকে, তবে তার দায় নিতে হবে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকেই। সোমবার জানিয়ে দিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। তবে এই নির্দেশ দিতে গিয়ে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদকে ভর্ৎসনাও করেছেন তিনি। বিচারপতি বলেন, ‘‘প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দুর্নীতি ও অসদাচরণের জন্য বিখ্যাত। কয়েক জনের অপদার্থতায় যোগ্যরা সুযোগ পায় না।’’

তবে বিচারপতি শুধু এখানেই থেমে থাকেননি, সোমবার এই মামলা চলাকালীন পর্ষদকে ভর্ৎসনাও করতে শোনা যায় তাঁকে। বিচার চলাকালীনই তিনি বলেন, ‘‘প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ দুর্নীতি ও অসদাচরণের  জন্য বিখ্যাত। আসল যোগ্যরা সুযোগ পায় না কিছু আধিকারিক ও আমলাদের অপদার্থতায়।’’

বয়স পেরিয়ে গেলেও চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউ নিতে হবে! প্রাথমিকের টেটের প্রশ্নভুল মামলায় নির্দেশ দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। 'বোর্ডের ভুল, বোর্ডকেই খেসারত দিতে হবে', এমনই মন্তব্য করলেন বিচরপতি।

প্রাথমিকের টেটের প্রশ্নপত্রে ৬টি প্রশ্ন ভুল থাকার দরুণ ২০১৪ সালে প্রাইমারি টেট পাশ করতে পারেননি। টেট উত্তীর্ণ না হওয়ায় ডাক পাননি ইন্টারভিউতেও। যতদিনে প্রাথমিক পর্যদ জানাল, প্রশ্ন ভুল থাকায় ৬ নম্বর অতিরিক্ত পাবেন চাকরিপ্রার্থী, ততদিনে চাকরির বয়স পেরিয়ে গিয়েছে। বাধ্য হয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন এক চাকরিপ্রার্থী। সেই মামলায় ফের নজিরবিহীন রায় দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। হাই কোর্টের নির্দেশে বয়স পেরলেও এবার ওই চাকরিপ্রার্থীর ইন্টারভিউ নিতে হবে পর্ষদকে। পাশ করলে দিতে হবে নিয়োগও।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের মন্তব্য, মেধাবী চাকরিপ্রার্থীরা লড়াই করে যাচ্ছে আর অযোগ্য অকৃতকার্যরা চাকরি করে যাচ্ছে। দুর্নীতিগ্রস্ত প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ। একটা চাকরির জন্য মেধাবী চাকরি প্রার্থী দেওয়ালে মাথা ঠুকছে, এমনকি চাকরির পরীক্ষায় বসা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

এদিন মামলার রায়দানে সময় বিচারপতির অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “বোর্ডের ভুল, বোর্ডকেই খেসারত দিতে হবে। প্রাথমিক পর্ষদ, যাদের এখন লোকে দুর্নীতি আর বেআইনি কাজের জায়গা হিসেবে চেনেন, তারাই বঞ্চিত ব্যক্তিকে চাকরি দেবে।” 

জানা গেছে,  ২০১৪ সালে মামলাকারী নেফাউর শেখ টেট পরীক্ষা দেন। তিনি উত্তীর্ণ হতে পারেননি। ২০১৬ সালে নিয়োগ প্রক্রিয়া শেষ হয়ে যায়। পরে প্রশ্নপত্রে ছ’টি প্রশ্ন ভুল থাকার অভিযোগ তুলে মামলা করেন। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে বোর্ড আদালতে জানায়, নেফাউর অতিরিক্ত ছয় নম্বর পেয়েছেন। কিন্তু ততদিনে নিয়োগের বয়স পেরিয়ে গিয়েছে। এরপর বোর্ডের ভুলে তাঁর নিয়োগ থমকে যাওয়ার অভিযোগ তুলে ফের মামলা করেন ওই চাকরিপ্রার্থী। সোমবার সেই মামলারই রায় দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।

বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ একটা ইন্টারভিউ বোর্ড গঠন করবে। ২০১৬’র গাইডলাইন অনুযায়ী চার সপ্তাহের মধ্যে ইন্টারভিউ নিতে হবে। তাতে উত্তীর্ণ হলে চাকরি দিতে হবে নেফাউরকে। বিচারপতি আরও জানিয়েছেন, তাঁকে প্রশিক্ষিত চাকরিপ্রার্থী হিসেবে ধরা হবে। এই বিষয়ে বোর্ডকে রিপোর্ট জমা করার জন্য ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।

close