নিউজ ডেস্ক: দীর্ঘদিনের দাবি মেনে সরকার রাজ্যের বিদ্যালয়গুলির শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের আবেদনের ভিত্তিতে বদলির জন্য উৎসশ্রী পোর্টাল চালু করে। শুরু থেকেই এই পোর্টালের নানান সমস্যা নিয়ে আমরা সোচ্চার হয়েছি। সম্প্রতি কলকাতা গেজেট প্রকাশ করে শীত ও গ্রীষ্মের ছুটির সময় পোর্টাল চালুর মাধ্যমে বদলির নির্দেশিকা জারি করেছে শিক্ষা দপ্তর।
যদিও সম্প্রতি এই পোর্টালের মাধ্যমে বহু শিক্ষক শিক্ষিকার শিক্ষাকর্মীর আবেদনপত্র এস এস সি-তে পড়ে রয়েছে। এমনকি নানান সমস্যার কারণে সম্প্রতি শিক্ষা দপ্তর উৎসশ্রী গিভেন্স শেলের মাধ্যমে অনলাইনে অভিযোগ জমা করতে বলেছে। এই জটিলতা গুলি থাকার মধ্যেও পোর্টাল বন্ধে নানান প্রশ্ন উঠছে।
উৎসশ্রীর নতুন গেজেট নোটিফিকেশনে যে বিষয়গুলি বলা হয়েছে তা হল-
১) পূর্বের যে চারটি প্রেফার ক্যাটাগরিতে(মেডিকেল গ্রাউন্ড, ৪০ শতাংশ অথবা তার বেশি শারীরিক প্রতিবন্ধী হলে, বিধবা অথবা ডিভোর্সি মহিলা, ৫৭ বছরের বেশি বয়স হলে) বদলির সুযোগ দেওয়া হয়েছিল সেগুলি সারা বছর কার্যকরী থাকবে কিন্তু 'এনি আদার গ্রাউন্ডে' বদলির বিষয়টি বছরে দুবার অর্থাৎ গ্রীষ্মকালীন ছুটি এবং শীতকালীন ছুটি সময়ে কার্যকরী হবে যাতে ছাত্রছাত্রীদের পঠন-পাঠনে ব্যাঘাত না ঘটে। যদিও দক্ষিণ বঙ্গে বিদ্যালয়গুলিতে শীতকালীন ছুটি থাকে বলে আমাদের জানা নেই।
২) প্রেফার ক্যাটাগরির শিক্ষক শিক্ষাকর্মীদের বদলির ব্যাপার সারা বছর কার্যকরী থাকবে। তাতে বাধা দেওয়া চলবে না।
৩) বিশেষ পরিস্থিতিতে বদলি প্রক্রিয়া সাময়িকভাবে স্থগিত থাকতে পারে যা নোটিফিকেশনের মধ্য দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হবে।
৪) ২০০৯ সালের শিক্ষা আইন অনুযায়ী ছাত্র-শিক্ষক অনুপাত যদি না থাকে তাহলে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ শিক্ষকের বদলির সুপারিশ করবেন না কিন্তু প্রেফার ক্যাটাগরির ক্ষেত্রে তা কার্যকর হবে না।
৫) মেডিকেল গ্রাউন্ডে আবেদনকারীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিদ্যালয়ের পরিচালন কমিটির ডাক্তার প্রতিনিধি অর্থাৎ বি এম ও এইচ-এর রিপোর্টের ভিত্তিতে জেলার ক্ষেত্রে সি এম ও এইচ এবং কলকাতার ক্ষেত্রে মেডিকেল সুপারিনটেনডেন্ট অথবা তার প্রতিনিধি বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবেন। তার ভিত্তিতে মেডিকেল গ্রাউন্ডে বদলির বিষয়টি নির্ধারিত হবে।
এই বিষয়ে শিক্ষক শিক্ষাকর্মী শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, ‘আমাদের বক্তব্য হলো, বহু শিক্ষক শিক্ষকর্মী বাড়ি থেকে বহু দূরে কর্মরত অবস্থায় রয়েছেন। তাঁদের সমস্যাটি অথবা নিজের জেলায় বদলির বিষয়টি গুরুত্ব পেল না অথচ এই দাবিটি দীর্ঘদিন থেকে শিক্ষক-শিক্ষা কর্মীদের দাবি ছিল। এই বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে নতুন নোটিফিকেশন জারি হোক। শিক্ষানীতি অনুযায়ী বিদ্যালয়গুলোতে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের বেশি শিক্ষক নিয়োগ করা হয় না। তাই প্রায় সমস্ত বিদ্যালয়ে ছাত্র অনুপাতে শিক্ষক সংখ্যা কম। ফলে 'এনি আদার গ্রাউন্ডে' বদলি প্রক্রিয়া পাওয়া একপ্রকার অসম্ভব হয়ে উঠবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিদ্যালয়গুলিতে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সিঙ্গেল সাবজেক্ট টিচার রয়েছেন। ভবিষ্যতে তাঁদের বদলি কীভাবে বাস্তবে কার্যকরী হবে সে ব্যাপারে কোন সমাধান সূত্র দেওয়া হল না নোটিফিকেশনে। অন্য আরেকটি নোটিফিকেশনে ডিসেম্বর, ২০২২ পর্যন্ত অথবা পরবর্তী নির্দেশিকা না দেওয়া বদলি প্রক্রিয়া স্থগিত রাখার কথা জানানো হয়েছে। যাঁরা ইতিমধ্যে আবেদন করেছেন তাঁদের বদলি প্রক্রিয়া দ্রুত সম্পন্ন করা হোক এবং সমস্ত শূন্যপদে স্বচ্ছ ভাবে দ্রুত নিয়োগের পাশাপাশি বদলি প্রক্রিয়া নিয়মিত ভাবে চালু রাখা হোক।’