নিউজ ডেস্ক: স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে আগেই গ্রেফতার হয়েছেন রাজ্যের প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। এবার এসএসসি দুর্নীতি মামলায় শান্তিপ্রসাদ সিন্হা ও অশোক সাহাকে গ্রেফতার করল সিবিআই। ধৃত দু’জনকেই দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদের পরই গ্রেফতারির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেয় সিবিআই। সূত্রের খবর, ধৃতরা তদন্তে অসহযোগিতা করছিলেন। কীভাবে চলত এই দুর্নীতি চক্র?
সিবিআইয়ের হাতে আসা নথি অনুযায়ী-
১. শান্তিপ্রসাদ সিনহা গোটা ষড়যন্ত্রের অন্যতম শরিক। পার্থবাবু নিয়োগের জন্য সুপারিশ পাঠাতেন তাঁর কাছে।
২. তাতে লেখা থাকত, কোন প্রার্থী কত টাকা দিয়েছেন এবং কোন পোস্টে নিয়োগ করা হবে।
৩. প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর ওই সুপারিশ দেখে নিয়োগের তালিকা তৈরি করতেন শান্তিপ্রসাদবাবু। তারপর সেটি পাঠাতেন এসএসসির এক শীর্ষ আধিকারিকের কাছে।
৪. শান্তিপ্রসাদের নির্দেশমতো নিয়োগপত্র তৈরি করতেন এসএসসি অফিসের দুই কর্মী।
৫. সেই নিয়োগপত্র আবার যেত শান্তিবাবুর কাছে।
৬. নিয়ম অনুযায়ী যে রিজিওনে নিয়োগ হবে, সেখানকার চেয়ারম্যানদের এই কপি পাঠানো হয়। তাতে তাঁদের সই ও স্ট্যাম্প থাকে। কিন্তু তা করা হয়নি।
৭. এখানেই জালিয়াতি করতেন প্রাক্তন উপদেষ্টা। সেই নামের তালিকা রিজিওনাল চেয়ারম্যানদের কাছে পাঠাননি শান্তিবাবু।
৮. সংশ্লিষ্ট পদাধিকারীদের স্বাক্ষর স্ক্যান (নকল) করে নিয়োগপত্রে বসিয়ে দেন।
৯. সুপারিশে চাকরি পাওয়া প্রার্থীদের নামের তালিকা কমিশনের ওয়েবসাইটে তোলা হয়নি।
১০. নিয়মমতো বোর্ড অব সেকেন্ডারি এডুকেশনের অফিসেও যায়নি নিয়োগপত্র। কোনও নোটিফিকেশনও হয়নি। SSC দফতরের পাশের একটি ভবনে গিয়ে সেই নিয়োগপত্র তুলে দিতেন অযোগ্য চাকরিপ্রার্থীর হাতে।
সিবিআইয়ের দাবি, এভাবে জালিয়াতি করেছেন দুই কর্তা। তবে তাঁরা শুধু একা নন, আরও অনেকে এই প্রক্রিয়ায় জড়িয়ে আছেন। খুব শীঘ্রই তাঁদের জেরা করা হবে। এখনও পর্যন্ত গ্রুপ সি নিয়োগের ক্ষেত্রেও তাঁর এই জালিয়াতির বিষয়টি সামনে এসেছে। উদ্ধার হওয়া নিয়োগপত্র থেকে সিবিআই অফিসাররা জেনেছেন, যাঁদের সেগুলি দেওয়া হয়, তাঁরা কেউ পাস করেননি। তাঁদের নাম পার্থবাবুর পাঠানো চিরকুটে ছিল।