নিউজ ডেস্ক: ২০১৮ কলেজ সার্ভিস কমিশনের অধ্যাপক (WBCSC SCAM) নিয়োগের নানা ত্রুটি ও দুর্নীতির কথা উল্লেখ করে হাইকোর্টের আইনজীবী তরুণজ্যোতি তেওয়ারীর মাধ্যমে ২২.০৭.২০২২ তারিখে আইনি নোটিশ পাঠায় নিয়োগ না পাওয়া মেধা তালিকাভুক্ত কিছু প্রার্থী। কলেজ সার্ভিস কমিশন সেই চিঠি পাওয়ার পর কোনো সদুত্তর না দিয়ে উল্টে এক প্রার্থীকে ইমেইল করে ডেকে পাঠায় ০৮.০৮.২০২২ তারিখ বিকাল ৪টায়। সৌগত বাগচী নামে বাংলা বিষয়ের মেধা তালিকাভুক্ত ওই প্রার্থী ইমেইল পাওয়ার পর সিএসসিকে ০৩ রা আগস্ট পাল্টা ইমেইল করে জানায়-
"কলেজে অধ্যাপক নিয়োগ ও তাঁদের বেতন যেহেতু জনগণের ট্যাক্সের টাকায় হয়ে থাকে, ফলে জনগণের পূর্ণ স্বাধীনতা রয়েছে সমগ্র নিয়োগ প্রক্রিয়া সঠিক ও স্বচ্ছভাবে হয়েছে কিনা এবং সবথেকে যোগ্য ব্যক্তিই নিয়োগ পেয়েছে কিনা সেটি জানার। সেজন্য কোনো গোপন মিটিং নয়। মিডিয়ার সামনে প্রকাশ্য সভাঘরে এই মিটিং আগামী ৮ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে। রাজ্য সরকার প্রকাশ্যে যেভাবে প্রশাসনিক, জেলার বৈঠক/মিটিং অনুষ্ঠিত করে।" মিটিং-এ তিনি তাঁদের আইনজীবী এবং ২০১৮ সালের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সরব ২০১৮ মেধাতালিকার প্রতিনিধি কিছু সদস্যকেও রাখার প্রস্তাব রাখেন। কিন্তু কলেজ সার্ভিস কমিশন এই প্রস্তাবকে প্রত্যাখ্যান করে। আজ কলেজ সার্ভিস কমিশনের দপ্তরে প্রার্থীরা গেলে বিশাল পুলিশ বাহিনী তাদের পথ অবরোধ করে। এমনকি আইনজীবী তরুণ জ্যোতি তেওয়ারির সঙ্গে একজন প্রার্থীকেই কলেজ সার্ভিস কমিশনে ঢোকার অনুমতি দেওয়া হয়।
মিটিং শেষে আইনজীবী তরুণজ্যোতি তেওয়ারিকে প্রশ্ন করলে তিনি জানান, "স্কুল থেকে কলেজ, নিয়োগের সমস্ত ক্ষেত্রে দুর্নীতিতে আকণ্ঠ ডুবে রাজ্য সরকার। কলেজের পাহাড় প্রমাণ দুর্নীতি (WBCSC SCAM) খুব শীঘ্রই প্রকাশ পাবে।"
বাংলার মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থী সৌগত বাগচী বলেন, "অধ্যাপক নিয়োগে যে দুর্নীতি ও অস্বচ্ছতা তার অধিকাংশ পয়েন্টেই চেয়ারম্যান সদুত্তর দিতে পারেননি, তাই আমাদের সঙ্গে আবার একদিন বসবেন বলে জানিয়েছেন। আজ আমাদের কাছে ৪৫০ পাতার দুর্নীতির নমুনা কপি ছিল, কয়েকটি তথ্য প্রমাণ আমরা তুলে দেব। সদর্থক পদক্ষেপ না নিলে দ্রুত কোর্টে যাব।"
দুর্নীতির কারণে চাকরি পাননি বয়সের কারণে শেষ ইন্টারভিউ দেওয়া বোটানি প্যানেলে তালিকাভুক্ত টিঙ্কু বিশ্বাস। তিনি জানান, "১৯৯২ সালে মাধ্যমিক সহ সমস্ত পরীক্ষায় কতজন প্রার্থী ফার্স্ট ডিভিশন পেয়েছে? আমার পিএইচডিসহ সমস্ত যোগ্যতা থাকলেও, নিয়োগ পেলাম না। অথচ, শুধুমাত্র মাস্টার ডিগ্রি যোগ্যতায় অনেকে নিয়োগ পেয়ে গেল। এটাকে দুর্নীতি না বললে আর কি বলবেন?"
আন্দোলনকারীদের পক্ষে হিমাদ্রি মণ্ডল জানান, "আগেও চেয়ারম্যান আমাদের সঙ্গে সামনাসামনি বসার ওপেন চ্যালেঞ্জ গ্রহণের সাহস দেখাতে পারেননি। দুর্নীতির যে শত শত তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে রয়েছে তাতে সরকার ও কলেজ সার্ভিস কমিশনের (WBCSC SCAM) সাহস হচ্ছে না আমাদের সামনে বসে চ্যালেঞ্জ নেওয়ার। যদি স্বচ্ছভাবে, নিয়ম মেনে নিয়োগ হয়ে থাকে, তাহলে সিএসসি মিডিয়ার সামনে আমাদের মুখোমুখি বসতে পারল না কেন? মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী ও শিক্ষামন্ত্রী বারবার প্রার্থীদের সঙ্গে সামনাসামনি বসে সমস্যা সমাধানের কথা বলছেন। অথচ তারাও এ ব্যাপারে চুপ। তাহলে সীমাহীন দুর্নীতিতে সরকারের সমর্থন ও দুমুখো নীতি রয়েছে, ধরে নেবো?"