নিউজ ডেস্ক: কলেজ সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে রাজ্যের সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজগুলিতে ২০১৮-র বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী সহকারী অধ্যাপক পদে নিয়োগে লাগামহীন দুর্নীতির প্রতিবাদে মেধাবী যোগ্য প্রার্থীরা বঞ্চিত হয়েছে বলে বারংবার কলকাতার রাজপথ উত্তাল হয়েছে। দুর্নীতিগ্রস্ত চেয়ারম্যান এখনো পর্যন্ত জনসমক্ষে নিয়োগের স্বচ্ছতা প্রমাণ করে স্কোর সিট প্রকাশ করতে পারেননি। যদিও আইনজীবীদের মতে 'কোনো নিয়োগ প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণকারী প্রার্থীদের আইন স্বীকৃত অধিকার মেধাতালিকায় তারা তাদের অবস্থান এবং অন্যান্য প্রার্থীদের অবস্থান ও প্রাপ্ত নম্বর জানতে পারবে'।
কলেজ সার্ভিস কমিশন মেধা তালিকা প্রকাশের সময় জনসমক্ষে কোনো নম্বর প্রকাশ করেনি। মহামান্য কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ এবং মহামান্য পশ্চিমবঙ্গ তথ্য কমিশনের অর্ডার থাকলেও কোনো বিষয়ের স্কোর শিট প্রার্থীদের বা জনসম্মুখে আনা হয়নি। এ বিষয়ে মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থী ড. প্রসেনজিৎ মাইতি বলছেন 'কমিশন অস্বচ্ছতা বজায় রেখে নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে মেধাবীদের বঞ্চনার মাধ্যমে কম যোগ্য প্রার্থীদের নিয়োগ করেছে অর্থের বিনিময়ে; এই নিয়োগ প্রক্রিয়া অস্বচ্ছ এবং দুর্নীতিপূর্ণ'। নিয়োগ প্রক্রিয়া বাতিল হবার দাবী তুলছেন প্রসেনজিৎবাবু।
এমতাবস্থায় কমিশনের চেয়ারম্যান দীপক করের পদত্যাগ এবং তদন্তের দাবিতে কলেজ স্ট্রিটের চৌমাথা, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেইন ক্যাম্পাসের প্রবেশ পথের বিপরীত দিক, শিয়ালদাহে চেয়ারম্যানের ছবিসহ বড়ো বড়ো পোস্টার চোখে পড়ছে। যেখানে দুর্নীতির যথাযথ তদন্ত ও চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করা হয়েছে।
প্রার্থীদের মতে এই বিপুল পরিমাণ দুর্নীতি জনস্বার্থের সঙ্গে জড়িত এবং দোষীদের অবিলম্বে বিচার বিভাগীয় তদন্ত করে শাস্তি হওয়া হোক।
মেধা তালিকায় থাকা প্রার্থী হিমাদ্রি মণ্ডল বলছেন- 'কমিশন কাকে কোন কলেজে সুপারিশ করেছে সেই তথ্যও জনসমক্ষে আনেনি, আরটিআই করলেও আরটিআর এর সঠিক উত্তর দেয়নি কারণ মেধাতালিকা বহির্ভূত বহু প্রার্থী নিয়োগ পেয়েছে, যাদের কলেজে চাকরি করার নূন্যতম যোগ্যতাও রয়েছে কিনা সেটিই সন্দেহ'।
এমতাবস্থায় ২৭ মে কলেজ সার্ভিস কমিশনের বিজ্ঞপ্তি অনুসারে জুন মাসে পরবর্তী নিয়োগ-প্রক্রিয়ার ইন্টারভিউ স্থগিত হবার কারণে দুর্নীতির তথ্য লোপাটের আশঙ্কা করছে মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থীরা। এসএসসির মতো সিএসসি ডেটারুম আধাসেনা দিয়ে ঘিরে ফেলার কথা বলছেন মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থী ড. ক্ষুদিরাম চক্রবর্তী। তবে রাজ্য সরকার এবং উচ্চশিক্ষা দপ্তর এই দুর্নীতির তদন্তে কতটা সদিচ্ছা দেখায় সেটাই দেখার; নাকি এখানেও সিবিআই তদন্তের নির্দেশ মহামান্য আদালতকে হস্তক্ষেপ করতে হবে তা সময়ই বলবে।