Kode Iklan atau kode lainnya

UPSC-তে দেশে দ্বিতীয় কলকাতার অঙ্কিতা, ছেড়েছিলেন সোশ্যাল মিডিয়া, শোনালেন উত্তরণের কাহিনী

নিউজ ডেস্ক: সোমবারই প্রকাশিত হয়েছে সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার (UPSC Civil Service) চূড়ান্ত ফল। এবারে সর্বভারতীয়স্তরের প্রতিযোগিতামূলক এই পরীক্ষায় পাশ করেছেন ৬৮৫ জন। সাফল্যের নিরিখে পুরুষদের টেক্কা দিয়ে প্রথম চারজনই মহিলা। মেধা তালিকার প্রথমে রয়েছেন শ্রুতি শর্মা (Shruti Sharma)। দ্বিতীয়, তৃতীয় এবং চতুর্থ স্থান অধিকারীরা হলেন অঙ্কিতা আগরওয়াল, চণ্ডিগড়ের যামিনী শিংলা এবং ঐশ্বর্য বর্মা। 

কলকাতায় রুবি পার্কের কাছে এক বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা অঙ্কিতা আগরওয়ালের৷ স্কুলের পাঠ শেষ করে পাড়ি দেন দিল্লি৷ সেখানে দিল্লি বিশ্বিদ্যালয়ের সেন্ট স্টিফেন্স কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক। রাষ্ট্রবিজ্ঞান ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ছিল তাঁর ঐচ্ছিক বিষয়৷ স্নাতক পাশ করার পর অঙ্কিতা যোগ দেন কর্পোরেট সংস্থার চাকরিতে৷ সেখানে ছিল মোটা বেতনের চাকরি সত্বেও দেশের জন্য কাজ করার তাগিদ অনুভব করেছেন মনের ভিতরে।  কর্পোরেট সংস্থায় কাজ করতে করতেই শুরু করেন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার প্রস্তুতি৷

২০১৯ সালে প্রথমবার বসেন ইউপিএসসি পরীক্ষায়৷ কিন্তু সফল হতে পারেননি৷ এর পরেই আসে ইন্ডিয়ান রেভিনিউ অফিসার হিসাবে কাজ করার সুযোগ৷ ছাড়েন কর্পোরেট সংস্থার চাকরি৷ সোমবার যখন সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হয় তখন তিনি ছিলেন ফরিদাবাদে ন্যাশানাল আকাদেমি অফ কাস্টমসে ইনডাইরেক্ট ট্যাক্সেস অ্য়ান্ড নারকোটিকসে৷ আইআরএস চাকরির ট্রেনিংয়ের জন্যই আপাতত ফরিদাবাদে রয়েছেন অঙ্কিতা৷ এরই মধ্যে ২০২১ সালে ফের ইউপিএসসি পরীক্ষায় বসেন৷ অবশেষে আইএএস হওয়ার স্বপ্নপূরণ৷

সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানান, কেউ সিভিল সার্ভেন্ট হতে চাইসে তাঁর লক্ষ্যটা সবার আগে স্থির থাকতে হবে৷  কারণ কঠিন দিন গুলিতে এই লক্ষ্যই তাঁকে এগিয়ে নিয়ে যাবে৷ ধারাবাহিকতাই সাফল্যের অন্যতম চাবিকাঠি৷ তাঁর কথায়, ‘‘এবার মেয়েদের রেজাল্ট উল্লেখযোগ্য৷ একই সঙ্গে এটা সম্মান ও গর্বের বিষয়৷’’ 

পরীক্ষায় সফল হওয়ার জন্য কঠিন অধ্যাবসায় তো ছিলই, মন স্থির রাখতে ছেড়েছিলেন  সোশ্যাল মিডিয়ার সমস্ত প্ল্যাটফর্ম৷ কারণ এগুলো বড্ড মনসংযোগ নষ্ট করে৷ প্রথমসারির এক সংবাদমাধ্যমকে অঙ্কিতা বলেন, ‘‘ভবিষ্যতে স্বাস্থ্য ও শিক্ষার উন্নতির পাশাপাশি মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করতে চাই। এ ছাড়াও গ্রামোন্নয়নে জন্য কাজ করার ইচ্ছাও রয়েছে। আমি বাংলার ক্যাডার। কাজ করার জন্য বাংলাকেই বেছে নেওয়ার চেষ্টা করব।’’

বছর পাঁচেকের এই প্রস্তুতি পর্বে বাড়িতে পড়াশোনার পাশাপাশি ভর্তি হয়েছিলেন কোচিং সেন্টারেও। দিনে কখনও ছয় ঘণ্টা, তো কখনও ১২ ঘণ্টা পড়াশোনা করেছেন৷ তবে এটা ছিল নিয়মিত। অঙ্কিতার কথায়, এখানে এক শতাংশও ফাঁকিরও জায়গা নেই৷ আগামী দিনের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষার্থীদের জন্য তাঁর পরামর্শ,  নিজের লক্ষ্যে অবিচল থেকে পড়াশোনা চালিয়ে যেতে হবে৷ তাঁর কথায়, ‘‘পড়াশোনায় ধৈর্য্য হারালে চলবে না। নিজের উপর ভরসা রাখতে হবে৷ সিভিল সার্ভিসে আসার কারণকেই অনুপ্রেরণা হিসাবে কাজে লাগাতে হবে।’’

এদিন UPSC পরীক্ষার যে চূড়ান্ত ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে তাতে আইএএস, আইপিএস, আইএফএস, সেন্ট্রাল সার্ভিস ‘এ’ ও সেন্ট্রাল সার্ভিস ‘বি’ তে মোট ৬৮৫ জন জায়গা করে নিয়েছেন। তার মধ্যে নতুন আইএএসের সংখ্যা ১৮০। ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসে জায়গা করে নিয়েছেন ৩৭ জন। ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিসে নিয়োগ পেয়েছেন ২০০ জন। 

এবারে প্রথম হয়েছেন শ্রুতি শর্মা, দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন অঙ্কিতা আগরওয়াল, তৃতীয় স্থান অধিকারীর নাম গামিনী সিংলা এবং চতুর্থ স্থান অধিকারী হলেন ঐশ্বর্য বর্মা। অষ্টম স্থান দখল করেছেন ঈশিতা রাঠি। অন্যদিকে, পঞ্চম, ষষ্ঠ, সপ্তম, নবম ও দশম স্থানে রয়েছেন যথাক্রমে উৎকর্ষ দ্বিবেদী, যক্ষ চৌধুরী, সম্যক এস জৈন, প্রীতম কুমার এবং হর কিরাত সিং রন্ধাওয়া।

close