Kode Iklan atau kode lainnya

‘আমার আমলে নিয়োগে কোনও দুর্নীতি হয়নি’, বড় দাবি SSC-র প্রাক্তন চেয়ারম্যান সুবীরেশ ভট্টাচার্যর

 

নিউজ ডেস্ক: স্কুল সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় নজিরবিহীন দুর্নীতি সামনে এল। মেয়াদ শেষের পরেও ৩৮১ জনকে সুপারিশপত্র! শান্তিপ্রসাদ সিন্হা ভুয়ো সুপারিশপত্র কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়কে দিতেন। সেই সুপারিশপত্রের ভিত্তিতে নিয়োগপত্র তৈরি করাতেন কল্যাণময়। রঞ্জিত বাগ কমিটির রিপোর্টে উল্লেখ।  

প্রাক্তন বিচারপতি রঞ্জিতকুমার বাগের নেতৃত্বাধীন কমিটি আজ কলকাতা হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে শিক্ষক নিয়োগ মামলায় রিপোর্ট পেশ করেছে। সেই রিপোর্টে বিভাগীয় তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে ৬ জনের বিরুদ্ধে। তার মধ্যে একজন সুবীরেশ ভট্টাচার্য। তিনি ৪ বছরের বেশি স্কুল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান ছিলেন। তাঁর আমলে শিক্ষক নিয়োগে কোনও দুর্নীতি হয়নি বলে দাবি করলেন সুবীরেশবাবু। বর্তমানে উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য সুবীরেশ ভট্টাচার্য। 

শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে সুবীরেশবাবু বলেন, “আমি চেয়ারম্যান থাকাকালে কোনও আপস করিনি। আগের নিয়মেই আমার সময়কালে প্রার্থী শুধু নিজের র‍্যাঙ্ক দেখবেন এই পদ্ধতি চালু করেছিলাম। কাউন্সেলিংয়ের সময় সবার ব়্যাঙ্ক টাঙানো হত। ২০১৮ সালের জুলাই পর্যন্ত আমি চেয়ারম্যান ছিলাম। তখন দুর্নীতি হয়নি।” তাঁর সময়ে কোনও অভিযোগ জমা পড়েনি বলে এদিন দাবি করলেন স্কুল সার্ভিস কমিশনের প্রাক্তন চেয়ারম্যান তথা উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য। আজই আদালতে বাগ কমিটি যে রিপোর্ট দিয়েছে তাতে গত কয়েকজন চেয়ারম্যানের আমলে নানা অনিয়মের কথা রিপোর্টে উল্লেখ করেছে বাগ কমিটি।

তিনি আরও বলেন, “যেহেতু এই মামলা বিচারাধীন তাই এ নিয়ে কিছু বলব না। কিন্তু স্কুল সার্ভিস কমিশন স্বচ্ছ নিয়োগের চেষ্টা আগেও করেছে, এখনও করছে। নিয়োগ যেখানেই হয়, সেখানে কিছু মানুষের অসন্তোষ হয়। অসন্তোষ থাকা মানেই দুর্নীতি প্রমাণিত হয় না। এই যে মামলাগুলো হচ্ছে, এতে নিয়োগ প্রক্রিয়া দীর্ঘায়িত হচ্ছে।”

নিয়োগ প্রক্রিয়ায় পদ্ধতিগত কিছু ত্রুটি থাকতে পারে বলে স্বীকার করে সুবীরেশবাবু বলেন, “পদ্ধতিগত কিছু ত্রুটি হয়ত ছিল। ওই ক্রটি আছে এবং থাকবেও। কিন্তু, আমার সময়ে কোনও দুর্নীতি হয়নি। যে প্যানেলের ভিত্তিতে নিয়োগ হয়েছিল সেই প্যানেল অবৈধ একথা আদালত বলেনি। সামান্য কিছু নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। নিশ্চয় স্কুল সার্ভিস কমিশন তা খতিয়ে দেখবে কেন এমন হল।”

এই বিষয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্য মঞ্চের রাজ্য সম্পাদক কিংকর অধিকারী বলেন, “এস এস সি-তে ৩৮১ জনকে ভুয়ো নিয়োগ করা হয়েছে। তার মধ্যে ২২২ জন পরীক্ষাই দেননি। বাকিরা পাশ করেনি। নিয়োগে ব্যাপক দুর্নীতির রিপোর্ট প্রকাশ করল বাগ কমিটি। রিপোর্টে প্রকাশ সর্বোচ্চ স্তরের আধিকারিক এবং প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীও জড়িত। শিক্ষাক্ষেত্রে এই চূড়ান্ত দুর্নীতি আমাদের চরম লজ্জার। কোনভাবেই তা বরদাস্ত করা যায় না। দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের অবিলম্বে নিয়োগের ব্যবস্থা করতে হবে।” 

মাধ্যমিক শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতি (STEA)-র দক্ষিণ ২৪ পরগণা জেলা সম্পাদক অনিমেষ হালদার বলেন, "যখন লক্ষ লক্ষ শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী শূন্যপদে রাজ্যের বিদ্যালয়গুলি রক্তাল্পতায় ভুগছে তখন SSC গ্রুপ-সি দুর্নীতিতে "সঞ্জিত বাগ কমিটি"র রিপোর্টে যেভাবে রক্ষকদের ভক্ষকের ভূমিকায় দেখা গেল তাকে ধিক্কার জানানোর কোনো ভাষা নেই। অবিলম্বে অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। বের করা হোক আধিকারিকদের উপর কার নির্দেশ বা হাত ছিল। যে সমস্ত যোগ্য চাকরিপ্রার্থীদের বঞ্চিত করা হয়েছে তাদের কাছে ক্ষমা চেয়ে অবিলম্বে নিয়োগের ব্যবস্থা করুক রাজ্য।"

close