নিউজ ডেস্ক: করোনার কারণে দীর্ঘদিন স্কুলের পঠন-পাঠন বন্ধ ছিল। এই অবস্থায় বিপুল অর্থ ব্যয় করে 'পঠন সেতু' নামে দিয়ে বিভিন্ন ক্লাস বিষয়ভিত্তিক বই প্রস্তুত করার কথা বলা হয়েছিল। কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে পূর্ব ক্লাসের কিছু পাঠ্যসূচীকে নিয়ে প্রতিটি শ্রেণির জন্য 'পঠন সেতু' নামে পাঠ্য বই ছাপানো হয়েছিল। এবার সেই পাঠ্য বই নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন শিক্ষকরা। আদৌ এটা কোনো কাজে লাগলো কী? উঠছে প্রশ্ন।
উচ্চ প্রাথমিক স্তরের জন্য বিদ্যালয় শিক্ষাবিভাগের উদ্যোগ ও ব্যবস্থাপনায় এবং বিশেষজ্ঞ কমিটির তত্ত্বাবধানে প্রায় সমস্ত বিষয়ের ‘ব্রিজ কোর্স’ তৈরি করার ঘোষণা হয়েছিল। ‘পঠন সেতু’ ও ‘শিখন সেতু’ নাম দিয়ে বিভিন্ন ক্লাস বিষয়ভিত্তিক বই স্কুলে স্কুলে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল।
শিক্ষাদপ্তর থেকে বলা হয়েছিল, ওই বইগুলি ছাত্রছাত্রীদের পূর্ববর্তী ক্লাসের সঙ্গে বর্তমান ক্লাসের সেতুবন্ধ হিসাবে কাজ করবে। শিক্ষকেরা পড়ুয়াদের অসম্পূর্ণতা পূরণে ওই বইয়ের সহায়তা নেবেন। এই বই শিক্ষার্থীদের কাছে পরিভাষায় ‘অ্যাকসিলারেটেড লার্নিং প্যাকেজ’ হিসেবে কাজ করবে। যা অত্যন্ত কার্যকরী পদক্ষেপ।
এই বিষয়ে বিশিষ্ট শিক্ষক কিংকর অধিকারী বলেন, “কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে পূর্ব ক্লাসের কিছু পাঠ্যসূচীকে নিয়ে প্রতিটি শ্রেণির জন্য 'পঠন সেতু' নামে পাঠ্য বই ছাপানো হলো। বিদ্যালয়ে সমস্ত শ্রেণির জন্য তা দেওয়া হল। কোথাও পৌঁছালো, কোথাও পৌঁছালো না। শেষ পর্যন্ত তার ব্যবহার কোথায়? বলা হয়েছিল শিক্ষা বর্ষের প্রথম ১০০ দিন প্রতিটি শ্রেণিতে 'পঠন সেতু' নিয়ে পঠন-পাঠন হবে। অথচ এখন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের নোটিশে বলা হয়েছে প্রথম পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়ন(1st Summative Evaluation) হবে পুরনো সিলেবাসের ভিত্তিতেই। যাঁরা নির্দেশ মতো এতদিন 'পঠন সেতু' বইগুলি ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ধাতস্থ করিয়েছেন তাঁরা অনেকে পুরনো সিলেবাস পড়ানো শুরুই করেননি। সেইসব ছাত্র-ছাত্রীদের কী হবে? নির্দেশ দু'রকম কেন? গত ২৯ মার্চ পর্ষদের পক্ষ থেকে নোটিশ দিয়ে জানানো হলো পর্যায়ক্রমিক মূল্যায়নে কথা। পুরো প্রক্রিয়াটি পরিকল্পনাহীন। কোন শিক্ষক সংগঠনের মতামত না নিয়ে কোটি কোটি টাকা ব্যয় করে এই পঠন সেতুর কোনো ব্যবহারিক মূল্য রইলো কি? অর্থের এতো অপচয়? গায় লাগে না? গায় লাগে খালি ন্যায্য পাওনা দেওয়ার বেলা?”