Kode Iklan atau kode lainnya

‘কেউ কথা রাখেনি’, রাজীবের দলে ফেরা নিয়ে আশাহত কল্যাণের মন্তব্য

 

নিউজ ডেস্ক: সব জল্পনার অবসান হল। তৃণমূলে যোগ দিলেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যইয়ের হাত ধরে আবারও তৃণমূলে প্রত্যবর্তন রাজীবের। আজ আগরতলার রবীন্দ্র ভবনের কাছে তৃণমূলের সভামঞ্চে উপস্থিত হন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর সঙ্গেই সভাস্থলে যান বিজেপি নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। আজই আনুষ্ঠানিক ভাবে তৃণমূলে ফিরলেন রাজীব। 

তবে রাজীবের প্রত্যবর্তনে খুশি হননি শ্রীরামপুরের তৃণমূল সাংসদ কল্যান ব্যানার্জি। রাজীবের প্রতি অভিযোগ করে তিনি বলেন, 'একজন অসৎ ব্যক্তিকে কেন আবার দলে ফিরিয়ে নেওয়া হল বলতে পারব না।' সিদ্ধান্তটা তিনি মানছেন কি না সে প্রসঙ্গে এই সাংসদ বলেন,  'দলে থাকতে গেলে দলের সিদ্ধান্ত মানতেই হবে।' 

কল্যানের কথায়, 'ভোটের আগে প্রচারে গিয়ে মমতা ব্যানার্জি বলেছিলেন গড়িয়াহাটে রাজীবের একাধিক বাড়ি আছে। দুবাইতেও বাড়ি আছে। অভিষেক ব্যানার্জী বলেছিলেন, দলের কর্মীদের মনঃক্ষুন্ন করে কাউকেই ফিরিয়ে নেওয়া হবে না। রবিবার এই সিদ্ধান্তের পর সুনীল গাঙ্গুলির সেই কবিতাটি মনে পড়ে গেল, কেউ কথা রাখেনি।' 

বিজেপিও তাঁদের প্রাক্তন এই 'সহকর্মী' সম্পর্কে কিছু বলতে আগ্রহী নয়। দলের নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গ বিজেপির সিলেবাসে ওই নামটাই নেই।' 

দলে যোগ দিয়েই রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “খালি আমি ভাবছি এত ভয় কীসের? ভয় কখন হয়? যখন গদি টলমল হয়। আর আজ ত্রিপু রায় গদি টলমল হয়ে গেছে। তাই এত ভয় পাচ্ছেন। অনেককে আসতে দেওয়া হচ্ছে না। কাল ঘুরেছি। প্রত্যেকের একটা কথা, দাদা কত তাড়াতাড়ি পরিবর্তন আসবে ত্রিপুরায়? সেই ত্রিপুরায় যিনি পরিবর্তন আনবেন তাঁরা হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী দিনে ত্রিপুরায় পরিবর্তন আসছে।”

রাজীব আরও বলেন, “আজকে আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞতা জানাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে যিনি আবার তাঁর ঘরে ফেরানোর জন্য আমাকে অনুমতি দিয়েছেন। আমি প্রণাম ও সম্মান জানাই নেত্রীকে। আমি ভুল করেছিলাম। স্বীকার করছি আমি ভুল করেছিলাম। একটা অভিমানে, জেদের বশে, রাগের বশে সিদ্ধা ন্ত নিয়েছিলাম। সেদিনও আমার নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মানা করেছিলেন। তাই আজ বলতে দ্বিধা নেই। অভিষেক আমাকে আধঘণ্টা ধরে বুঝিয়েছিলেন। আমি লজ্জিত এবং অনুতপ্ত।”

দলের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফ্রেমে-বাঁধানো ছবি হাতে শেষবার বিধানসভা থেকে বেরিয়েছিলেন রাজীব। ভেবেছিলেন বিজেপি বিধায়ক হয়ে ফেরত আসবেন। কিন্তু সে স্বপ্ন পূর্ণ হয়নি। ভোট পর্ব মেটার পর থেকেই ডোমজুড়ে পরাজিত বিজেপি প্রার্থী রাজীব ক্রমশ গেরুয়া শিবিরের সঙ্গে দূরত্ব এবং পুরনো দল তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু করেন। অবশেষে তা সম্পূর্ণ হল।

বিজেপি-তে যোগ দেওয়ার সময় কলকাতায় চাটার্ড বিমান পাঠিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। রাজীবের সঙ্গে সেই বিমানে আরও যাঁরা গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে বিধানসভা ভোটে জিতেছেন শুধু পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায়। পার্থ নাকি দোলাচলে। এখনও পর্যন্ত যা খবর, রবিবারই ফিরে যাচ্ছেন রাজীব।

২০১৬ সালে ডোমজুড় থেকে রাজ্যে সর্বোচ্চ ব্যবধানে (এক লক্ষেরও বেশি) ভোটে জিতেছিলেন তৃণমূলের রাজীব। বিজেপি-র টিকিটে ২০২১ সালে সেই ডোমজুড়েই তিনি হেরেছেন ৪২ হাজারেরও বেশি ভোটে। রাজীব তার পর থেকেই আড়ালে চলে যান। বিজেপি দফতরের আশপাশে তাঁকে আর দেখাই যায়নি। তৃণমূলের কাছাকাছি যেতে কোনও পথই ছাড়েননি রাজীব। এক সময়ে তিনি যাঁর ‘অনুগামী’ বলে নিজের পরিচয় দিতেন সেই শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করে নেটমাধ্যমে পোস্ট করেছেন। বিজেপি-র নিন্দাও করেছেন সেই সব পোস্টে।

close