Kode Iklan atau kode lainnya

চোখে দেখতে পান না বলে রেল চাকরি দেয়নি, কঠোর পরিশ্রমে করে সেই কন্যে এখন দেশের প্রথম দৃষ্টিহীন মহিলা IAS অফিসার

 প্রাঞ্জল পাতিল

নিউজ ডেস্ক: প্রবল ইচ্ছেশক্তিতেই এসেছে জয়! মনের জোর আর ইচ্ছে থাকলে যে কোনও অসম্ভবকেই সম্ভব করে তোলা যায়৷ সেটা যেন আরও প্রমাণ করেছেন এই কন্যে! মহারাষ্ট্রের উল্লাসনগরের কন্যা প্রাঞ্জল পাতিল। তিনি দৃষ্টিহীন, অন্ধ। চোখে দেখতে পান না বলে চাকরি দেয়নি রেল। কিন্তু কঠোর পরিশ্রম ও ইচ্ছেশক্তির জোরে তিনি আজ হয়ে উঠেছেন দেশের প্রথম দৃষ্টিহীন মহিলা IAS অফিসার৷ প্রাঞ্জলের এই কাহিনী অনুপ্রাণিত করেছে হাজারও মানুষকে।

চোখ আমাদের শরীরের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যে অন্ধ সেই বুঝতে পারে এই অমূল্য অঙ্গ কতটা মূল্যবান। IAS ভারতের সবথেকে কঠিন পরীক্ষার মধ্যে অন্যতম আর একজন নেত্রহীন ব্যক্তির IAS পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়া অবাক করেছে সকলকেই। মাত্র ৬ বছর বয়সে তার দৃষ্টি হারান। বেশির ভাগ পরীক্ষার্থী এই IAS বা পরিষ্কার করে বললে UPSC পরিক্ষায় উত্তীর্ণই হতে পারে না। সফলতার হার খুব কম আর এদিকে প্রাঞ্জল এর তো চোখই নেই।

মহারাষ্ট্র রাজ্যের ছোট্ট একটি শহর উল্লাসনগর সেখানে থাকতো প্রাঞ্জল। জন্ম থেকেই তার দৃষ্টিশক্তি বেশ কিছুটা দুর্বল ছিল এবং ছয় বছর বয়সে তার দৃষ্টিশক্তি সম্পূর্ণরূপেই চলে যায়। কিন্তু যার অদম্য সাহস আর ইচ্ছা তাকে কি আর আটকানো যায়? হাল ছাড়েননি তিনি, সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজ থেকে পলিটিক্যাল সাইন্সে গ্রাজুয়েশন করেন। JNU থেকে তিনি মাস্টার ডিগ্রি করেন আর তারপর Mphil এবং Phd, আর তারপরে সিদ্ধান্ত নেন তিনি সিভিল সার্ভিস এ যাবেন অর্থাৎ UPSC দেবেন ভাবতেও অবাক লাগে যে পরীক্ষাতে লক্ষ লক্ষ ছেলেমেয়ে প্রত্যেক বছর চেষ্টা করলেও মাত্র কয়েকজন সুযোগ পায় সেই পরীক্ষাতে একজন অন্ধ মেয়ে হয়ে প্রথমবারের চেষ্টাতেই সারা ভারতবর্ষে ৭৭৩ তম স্থান অধিকার করেন। কিন্তু তার দৃষ্টি শক্তি দুর্বল হওয়ার কারণে Indian Railways Accounts committee থেকে তাকে Reject করা হয়।

IRAC তে রিজেক্ট করলেও সে ভেঙে পড়েনি, Postal and Telecommunications Department তে তাকে একটা চাকরি দেওয়া হয় যেটা তার যোগ্যতার তুলনায় কম ছিল। কিন্তু সেখানে থেমে থাকার পাত্রী তিনি নন। ২০১৭ সালে আবার তিনি নিজের সবটুকু দিয়ে UPSC দেন, আর এবারে তাকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি এবং সে যেটা চেয়েছিল সেটা সে পেয়ে যায়, অর্থাৎ এবারে সারা ভারতে তার স্থান হয় ১২৪ এবং এবারে তাকে IAS হওয়া থেকে কেউ আটকাতে পারে নি। কঠোর পরিশ্রম এবং মানসিকতা দিয়ে সে তার স্বপ্নকে পূরণ করেন। প্রাঞ্জল প্রমান করলেন, দৈহিক প্রতিবন্ধকতা শেষ কথা নয়, মনের জোর আর অধ্যাবসাই শেষ কথা।

বর্তমানে কেরালার তিরুবন্তপুরমে সাব-কালেক্টর পদে কর্মরত প্রাঞ্জল। তাঁর এই কাহিনী যেন আমাদের প্রতিনিয়ত অনুপ্রেরণা যোগায়৷ দৃষ্টিহীন এই কন্যে ফের যেন প্রমাণ করলেন, যতই বাধাবিপত্তি আসুক, জেদ এবং মানসিকতার জোরে সব বাধা অতিক্রম করেই এগিয়ে চলা সম্ভব। 

close