Kode Iklan atau kode lainnya

টেট কেলেঙ্কারি: প্রাথমিকে ৪২ হাজার শিক্ষকেরই নিয়োগ নিয়ে প্ৰশ্ন কলকাতা হাইকোর্টের

নিউজ ডেস্ক: কিসের ভিত্তিতে শুধু ২৬৯ জন চাকরিপ্রার্থীর নম্বর আচমকা বাড়িয়ে দিয়ে তাঁদের পাশ করানো হয়েছিল, প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ তার জোরালো ব্যাখ্যা দিতে পারেনি বলে কলকাতা হাই কোর্ট সূত্রের খবর। এই অবস্থায় এ-পর্যন্ত নিযুক্ত ৪২ হাজার প্রাথমিক শিক্ষকের নিয়োগ নিয়েই কার্যত প্রশ্ন তুলেছে উচ্চ আদালত। তাদের আরও প্রশ্ন, নিয়োগের যোগ্যতা যাচাইয়ের পরীক্ষায় কোনও প্রশ্নে ভুল থাকলে তার জন্য তো সব প্রার্থীরই নশ্বর পাওয়ার কথা। বেছে বেছে কিছু প্রার্থীকে সেই বাড়তি নম্বর কেন? 

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে সিবিআই তদন্তের বিরোধিতা করে হাই কোর্টের ডিভিশন বেঞ্চে রাজ্য সরকার ও প্রাথমিক শিক্ষা পর্যদের আপিল মামলায় পর্যদ বৃহস্পতিবার শুধু যে বিভিন্ন প্রশ্নের যথাযথ জবাব ও সুষ্ঠু ব্যাখ্যা দিতে পারেনি, তা-ই নয়। আন্দোলনকারী কর্মপ্রার্থাদের কৌসুলিদের সওয়ালের সামনে অনেকটাই দিশাহারা ছিলেন পর্যদ ও সরকারের আইনজীবীরা। আগামী বৃহস্পতিবার ফের এই মামলার শুনানি হওয়ার কথা।

২০১৪ সালের টেটের একটি প্রশ্ন ভুল ছিল এই যুক্তি দেখিয়ে ২০১৭ সালে কিছু প্রার্থীর নম্বর বাড়ানো হয়। তাদের মধ্য থেকে ২৬৯ জনকে নিয়োগ করা হয়। পরে এই সংখ্যাটা সিঙ্গেল বেঞ্চে জানানো হয় ২৬৯ নয়, ২৭৩ জন কে চাকরি দেওয়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার শুনানিতে আদালত বার বার প্রশ্ন করে কিসের ভিত্তিতে ঐ সমস্ত প্রার্থীকে এক নম্বর করে বাড়ানো হয়েছে? প্রশ্ন ভুল থাকলে তো সব প্রার্থীই নাম্বার পাওয়ার যোগ্য। এই নম্বর দেওয়ার জন্য বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়েছিল কিনা তাও জানতে চেয়েছে কোর্ট। 

প্রাথমিকের টেটে নিয়োগ সংক্রান্ত একটি মামলার বিচারপতি সুব্রত তালুকদার এবং বিচারপতি লপিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে পর্ষদের কাছে জানতে চায়, প্রশ্ন ভুল থাকার জন্য যখন পরীক্ষার্থীদের বাড়তি ১ নম্বর দেওয়ার সিদ্ধান্ত হল, তখন তা সমস্ত পরীক্ষার্থীকে দেওয়া হয়নি কেন? পর্ষদ কীসের ভিত্তিতে ওই ২৭৩ জনকে বেছে নিয়েছিল? বিচারপতিরা সরাসরিই জানতে চান, ‘‘প্রশ্ন যদি ভুল থেকে থাকে তবে কৃতকার্য এবং অকৃতকার্য— সব প্রার্থীদেরই এক নম্বর করে বাড়ানো উচিত ছিল না কি? কেন এই বৈষম্য করা হয়েছে?’’

এই সমস্ত প্রশ্নের জবাবে পর্ষদ জানিয়েছে যে শুধুমাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত প্রার্থীদের আইন মেনে নাম্বার দেয়া হয়েছে। পর্ষদ আদালতে জনিয়েছিল টেট ফেল করা ২৭৮৭ জন প্রার্থী একটি প্রশ্ন ভুল থাকার জন্য নাম্বার বাড়ানোর জন্য আবেদন করেছিল! তাঁর পরিপ্রেক্ষিতে শুধুমাত্র প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ২৭৩ চাকরিপ্রার্থীদের বেছে নেওয়া হয়েছিল!

সবকিছু শুনে এই নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিঙ্গেল বেঞ্চের রায়ে স্থগিতাদেশ দেয়নি ডিভিশন বেঞ্চ। প্রাইমারি ২৬৯ জনের চাকরি বাতিল এবং প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যর অপসারণে আপাতত সিঙ্গেল বেঞ্চের রায় বহাল থাকছে। মামলার পরবর্তী শুনানি ৩০ জুন।

close