সরকারি নির্দেশিকার তোয়াক্কা না করে গোপনে প্রাইভেট টিউশনি! ৯১ জন শিক্ষকের তালিকা জমা
নিউজ ডেস্ক: সরকারি নির্দেশিকার তোয়াক্কা না করেই প্রাইভেট টিউশনি করার অভিযোগে ৯১ জন সরকারি স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্মারকলিপি জমা দেওয়া হল বালুরঘাটে। নির্দেশিকা তোয়াক্কা না করেই নাকি আড়ালে আবডালে টিউশন পড়াচ্ছে অনেকে। এমনই অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলায়।
শিক্ষার অধিকার আইন অনুসারে স্কুলের শিক্ষকরা গৃহ শিক্ষকতার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন না। সবার জন্য শিক্ষা ২০০৯ আইন অনুযায়ী কোনও স্কুল শিক্ষক, মাদ্রাসা শিক্ষক নিজেকে টিউশনে যুক্ত করতে পারবেন না। শিক্ষকরা যাতে প্রাইভেট টিউশন না করেন, তার জন্য এর আগেও নির্দেশিকা দিয়েছে রাজ্য সরকার। রাজ্যে প্রতিটি জেলায় নির্দেশিকা পাঠানো হয়েছে সরকারি ও সরকার পোষিত বিদ্যালয়, মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকারা কোনও ভাবেই টিউশন করতে পারবেন না।
বুধবার জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক)-এর কাছে লিখিতভাবে অভিযোগ জানাল গৃহশিক্ষকদের সংগঠন। তাঁদের অভিযোগ, বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসনকে এর আগে একাধিকবার বলা হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাই বৃহস্পতিবার তাঁরা মোট ৯১ জন হাইস্কুল শিক্ষকের নাম জেলা স্কুল পরিদর্শকের কাছে জমা করেন। অভিযোগ ওই তালিকায় থাকা ৯১ জন সরকারি শিক্ষক গোপনে টিউশন পড়িয়ে চলছেন।
বৃহস্পতিবার একটি মিছিলও করেন পশ্চিবঙ্গ গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতির সদস্যরা। তাঁদের বক্তব্য, দাবি মানা না হলে আগামী দিনে আরও বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটবেন তাঁরা। বৃহস্পতিবার কেবল হাই স্কুলের শিক্ষকদের নামের তালিকা জমা দেওয়া হলেও পরবর্তী সময়ে প্রাথমিক স্কুল শিক্ষকদের নামের তালিকাও জমা দেওয়া হবে বলে তাঁরা জানিয়েছে।
গৃহশিক্ষক কল্যাণ সমিতির দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা কমিটির সহ সভাপতি মাধব সাহা এদিন বলেন, “যাঁরা সরকারি নির্দেশিকা মানছেন না, ছাত্রদের নিয়ে লুকোচুরি খেলে প্রাইভেট টিউশন করছেন, তাঁদের নামের তালিকা আমরা স্মারকলিপি হিসেবে ডিআই-এর কাছে জমা দিয়েছি। আমরা আপাতত ৯১ জন শিক্ষকের নামের তালিকা তুলে দিচ্ছি। শিশু শিক্ষা অধিকার আইনে বলা আছে, কোনও সরকারি স্কুল শিক্ষক টিউশন পড়াতে পারবেন না। তাঁরা যদি মনে করেন, স্কুলের মধ্যেই রিমেডিয়াল ক্লাস নিতে পারেন।”
উল্লেখ্য, স্কুলশিক্ষা দপ্তর সম্প্রতি ৬১ জন স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। ওই শিক্ষকরা সরকারি বেতন নেওয়ার পাশাপাশি টিউশনও করেন বলে অভিযোগ। এই সংখ্যা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। শিক্ষকদের একটি বড় অংশই গোপনে অর্থের বিনিময়ে টিউশন পড়ান। বলাই বাহুল্য সেই টাকা কর বহির্ভূত। অর্থাৎ আয়কর জমা দেওয়ার সময় সেই টাকার হিসাব দেখানো হয় না।