Kode Iklan atau kode lainnya

কলেজ সার্ভিস কমিশনের সহকারী অধ্যাপক নিয়োগেও সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজনপোষণের প্রমাণ প্রকাশ ও তদন্তের দাবি

নিউজ ডেস্ক: শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি নিয়ে রাজ্য এই মুহূর্তে সরগরম। স্কুল সার্ভিস কমিশনের পর প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের নিয়োগ দুর্নীতি নিয়েও চলছে সিবিআই মামলা। একাধিক অভিযোগ উঠছে কলেজ সার্ভিস কমিশনকে নিয়েও। ২০১৮ পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশনের সহকারী অধ্যাপক নিয়োগে সীমাহীন দুর্নীতি, স্বজনপোষণের প্রমাণ প্রকাশ ও তদন্তের দাবিতে প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করলেন কলেজের মেধাতালিকা ভুক্ত বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীরা। 

রাজ্যের অন্যান্য নিয়োগের মতো ২০১৮ সালের কলেজ সার্ভিস কমিশনের সহকারী অধ্যাপক  নিয়োগও আকণ্ঠ দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়েছে বলে দাবি তাঁদের। 

গণিত বিষয়ে মেধা তালিকায় নাম থাকা সত্ত্বেও চাকরি না পাওয়া ড. পলাশ মণ্ডল বললেন, "গণিত ও সাঁওতালি বিষয়ে মেধা তালিকা বহির্ভূত প্রার্থীদের নিয়োগ করেছে কমিশন সমগ্র নিয়োগ প্রক্রিয়া সকলকে অন্ধকারে রেখে সম্পন্ন হয়েছে, ফলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস নিয়োগে শ্বেতপত্র প্রকাশিত হলে এমন বহু দৃষ্টান্ত বেরিয়ে আসবে।" 

ড. ক্ষুদিরাম চক্রবর্তী বলেন, “বহু নেতা-মন্ত্রী, প্রভাবশালী ব্যক্তির আত্মীয়, যারা অত্যন্ত কম যোগ্যতা সম্পূর্ণ, যাদের মেধা তালিকায় নাম থাকার কথাই নয়, তাদেরকেও কমিশন নিজেদের নেওয়া সেট (SET) পাস করিয়ে নিয়োগ দিয়েছে।" 

তীব্র ক্ষোভ উগরে দিয়ে বিনয় কৃষ্ণ পাল জানালেন, স্বেচ্ছাচারিতা, দুর্নীতি ও স্বজনপোষনের জন্য ইন্টারভিউতে নিয়ম বহির্ভূতভাবে ৪০-৪৫ শতাংশ  নাম্বার রেখে তুলনায় কম যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীদের ইন্টারভিউতে প্রায় পূর্ণ নম্বর দিয়ে তাদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। হাইকোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও  এখনো পর্যন্ত যারা চাকরি পেয়েছে তাদের নম্বর, কোন কলেজে চাকরি পেয়েছে, তাদের কলেজে পড়ানোর আদৌ যোগ্যতা আছে কিনা সেটুকুও কমিশন প্রকাশ করেনি।

দুর্নীতির কারণে চাকরি পাননি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম শ্রেণিতে প্রথম, গোল্ড মেডেলিস্ট প্রিয়াঙ্কা কুণ্ডু। অথচ তৃণমূলের বিধায়ক সমীর পোদ্দার নিজের জামাইকে তিনি যে কলেজের সেক্রেটারি  ছিলেন সেখানে চাকরি করিয়ে দিয়েছেন। আর আর এক তৃণমূল নেতা ও মন্ত্রীর ভাইপো অসংরক্ষিত ক্যাটাগরির হলেও তাকে সংরক্ষিত পদে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এমনই অভিযোগ বঞ্চিত চাকরি প্রার্থীদের। 

এই নিয়ে প্রিয়াঙ্কা কণ্ডু বললেন, “এমন দুর্নীতির তথ্য রয়েছে ভুরি ভুরি। আর আমরা কিন্তু সবাই মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থী, কেউ ওয়েটিং লিস্টের প্রার্থী নোই। তাহলে মেধা তালিকার প্রথম জন চাকরি পেলে আমরা চাকরি পাবো না কেন? রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বারবার বলছেন যোগ্যরা যাতে বঞ্চিত না হয় তিনি সেটি দেখবেন। তাহলে তিনি কেন কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন না আমাদের নিয়ে? তিনিও তো একজন মহিলা, একজন মহিলা হয়ে আমাদের মহিলাদের সমস্যাকে তিনি কেন বুঝছেন না?"

এছাড়াও পদ তৈরি হওয়ার আগেই সেই পদে নিয়োগ, বহু আগে চাকরির বয়স পেরিয়ে যাওয়া প্রার্থীদের চাকরি দেওয়া, একজনকে দু-তিনবার কাউনসিলিং-এর সুযোগ দান, ইচ্ছামতো কিছু বিষয়ের মেধা তালিকার মেয়াদ বৃদ্ধি করে নিজস্ব নিয়ম ভেঙে মেধা তালিকা প্রকাশের বহু পরে সিট স্যাঙ্কশান করে বহু জনকে নিয়োগ দিয়েছে কমিশন। এমনই অভিযোগ মেধাতালিকা ভুক্ত চাকরি প্রার্থীদের। কোনো কোনো বিষয়ের মেধা তালিকার সকল প্রার্থীকে নিয়োগ দিলেও কিছু বিষয়ে নিয়োগ হয়েছে খুবই সামান্য --এমন বহু বৈষম্য, দুর্নীতির খতিয়ান আজ ২০১৮ কলেজ সার্ভিসের নিয়োগ না পাওয়া মেধা তালিকাভুক্তরা তুলে ধরলেন। সিবিআইয়ের দাবিতে সাধারণ মানুষকে তাদের দিকে যাবতীয় সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তারা মঞ্চ থেকে একটি পোস্টার ও লঞ্চ করেন।

২০১৮ সালের বঞ্চিত মেধাতালিকা ভুক্ত চাকরি প্রার্থীদের দাবি-

১. ২০১৮ কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির যথাযথ বিচারবিভাগীয় ও সিবিআই তদন্ত। দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের শাস্তি এবং চেয়ারম্যানের শীঘ্রই পদত্যাগ।

২. ২০১৮ কলেজ সার্ভিস কমিশনের নিয়োগ দুর্নীতির কারণে বঞ্চিত-মেধা তালিকাভুক্ত সমস্ত প্রার্থীকে নিয়োগ। 

close