নিউজ ডেস্ক: প্রাথমিকের টেট কেলেঙ্কারিতে দুর্নীতির বহর আরও বাড়ল। ২৬৯ জন নয়, ২৭৩ জনের নম্বর বৃদ্ধি করা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে পেশ করা হলফনামায় প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ জানিয়েছে, ২৬৯ নয়, ২৭৩ জনকে ১ নম্বর করে অতিরিক্ত দেওয়া হয়েছিল।
গত সোমবার প্রাথমিক টেট নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সংসদের আইনজীবী জানান, ২০১৪ প্রাথমিক টেটে ২৬৯ জনকে অতিরিক্ত ১ নম্বর করে দিয়ে পাশ করানো হয়েছিল। এরপরেই ২৬৯ জনের চাকরি বাতিল করে আদালত। এবার আরও চার জন বাড়ল।
পর্ষদ আদালতে জানিয়েছে, ‘টেট-প্রশ্নপত্রে ভুল রয়েছে, নম্বর বাড়ানো হোক, এই মর্মে জমা পড়ে ২,৭৮৭টি আবেদনপত্র। এঁদের মধ্যে ২৭৩ জন প্রশিক্ষিত প্রার্থীকে বাড়তি ১ নম্বর করে দেওয়া হয়েছিল। টেট ২০১৪ অফলাইনে হয়েছিল, অনুত্তীর্ণ প্রার্থীদের তালিকা পর্ষদের কাছে ছিল না।’ এখন এই তথ্য প্রকাশ্যে আসার পর আদালত কী পদক্ষেপ করে সেটাই দেখার।
২০১৬ সালের প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। সুপ্রিয় সরকার নামের একজন চাকরি পেয়েছিলেন। যদিও তাঁর নাম মেধাতালিকায় ছিল না। অতিরিক্ত একটি মেধা তালিকায় তাঁর নাম আসে। অনিয়ম করে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল বলে অভিযোগ ওঠে।
সব মিলিয়ে মোট ২৬৯ জন এমন শিক্ষকের নাম আসে। এই ২৬৯ জন শিক্ষকের অবিলম্বে বেতন বন্ধ করার নির্দেশ দেয় আদালত। পাশাপাশি তাঁরা যাতে কোনঅ ভাবেই স্কুলের মধ্যে প্রবেশ করতে না পারেন সংশ্লিষ্ট ডিআইকে তা নিশ্চিত করতে বলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়। একই সঙ্গে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদকে এব্যাপারে রিপোর্ট পেশের নির্দেশ দেন।
বুধবার আদালতে সেই রিপোর্ট জমা পড়েছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, সংসদ জানিয়েছে, ২৬৯ জন নয়, ২৭৩ জনকে অতিরিক্ত ১ নম্বর করে দিয়েছে তারা। সংসদের দাবি, প্রশ্নপত্রে ভুল থাকায় বিভিন্ন জায়গা থেকে চিঠি দিয়ে তাদের ভুল প্রশ্নে পুরো নম্বর দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। সেই সব বিবেচনা করেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল তারা। তবে কোন যুক্তিতে ২৭৩ জনকেই অতিরিক্ত নম্বর দেওয়া হল তা এখনো স্পষ্ট নয়।
অন্যদিকে, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় সিঙ্গের বেঞ্চের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চে গেল প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ৷ মামলা দায়েরের অনুমতি দিল বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের ডিভিশন বেঞ্চ৷ পর্ষদের তরফ থেকে আদালতে আবেদন করে বলা হয়, প্রাথমিকের মামলাগুলির ক্ষেত্রে সিঙ্গেল বেঞ্চের তরফে যে যে নির্দেশিকা দেওয়া হয়েছে, সেই নির্দেশগুলিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে তাঁরা মামলা দায়ের করতে চান। মামলা দায়েরের অনুমতি দেয় ডিভিশন বেঞ্চ৷ আগামী সোমবার ডিভিশন বেঞ্চে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতি মামলার শুনানি হতে পারে।