‘ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছিল, রত্না চক্রবর্তী বাগচীক দরখাস্তটাই নেননি’, সংসদের দারস্থ একশো শতাংশ দৃষ্টিহীন যুবক

তিনি একশো শতাংশ দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী। প্রাথমিকের টেট উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও পাননি চাকরি। কেশপুরের সাহেব সরকার নামে বছর বত্রিশের যুবক এ বার চাকরি চেয়ে

নিউজ ডেস্ক: তিনি একশো শতাংশ দৃষ্টিহীন প্রতিবন্ধী। প্রাথমিকের টেট উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও পাননি চাকরি। কেশপুরের সাহেব সরকার নামে বছর বত্রিশের যুবক এ বার চাকরি চেয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে দরবার করলেন। প্রাথমিক টেট উত্তীর্ণ হয়েছেন সেই ২০১৪ সালে। একশো শতাংশ দৃষ্টিহীন হওয়া সত্ত্বেও চাকরি পাননি। 

সাহেবের বাড়ি কেশপুরের আনন্দপুরে। টেট উত্তীর্ণ হওয়া সত্ত্বেও কেন তাঁর চাকরি হল না, তা জানতে এর আগে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্যের দফতরেও গিয়েছিলেন সাহেব। পর্ষদের সচিব রত্না চক্রবর্তী বাগচীর দফতরেও তিনি গিয়েছেন বলে জানাচ্ছেন দৃষ্টিহীন ওই যুবক।

সাহেবের অভিযোগ, ‘‘মানিক ভট্টাচার্যের কাছে গিয়েছিলাম। ওখানে যাঁরা ছিলেন, তাঁরা ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়েছিলেন। রত্না চক্রবর্তী বাগচীকেও অনুরোধ করেছিলাম, আমার দরখাস্তটা অন্তত নিন। উনি দরখাস্তটাই নেননি।’’ সাহেবের আক্ষেপ, ‘‘দিদি (মুখ্যমন্ত্রী) বলেছিলেন টেট উত্তীর্ণদের নিয়োগ দেবেন। টেট উত্তীর্ণ হয়েও এখনও নিয়োগপত্র পেলাম না।’’

সাহেব জানাচ্ছেন, সম্প্রতি তিনিও তাঁর আবেদন নিয়ে গিয়েছিলেন জেলার অতিরিক্ত জেলাশাসক (সমাজকল্যাণ) কেমপা হোন্নাইয়ার দফতরে। আইএএস কেমপাও একশো শতাংশ দৃষ্টিহীন। সব শুনে তিনি সাহেবকে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদে যাওয়ার পরামর্শ দেন। এরপরই জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান কৃষ্ণেন্দু বিষইয়ের দফতরে যান সাহেব।

২০১৪-র টেটে উত্তীর্ণ হয়ে ইন্টারভিউও দিয়েছিলেন সাহেব। তিনি বলছেন, ‘‘ইন্টারভিউ ভালই হয়েছিল। তা সত্ত্বেও প্রথম নিয়োগ তালিকায় আমার নাম ছিল না। প্রকাশিত দ্বিতীয় তালিকাতেও আমার নাম ছিল না।’’ সাহেব জানাচ্ছেন, তিনি হাই কোর্টে মামলাও করেছেন। তাঁর মামলাটি এখন বিচারাধীন রয়েছে।

প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতি নিয়ে শোরগোল পড়েছে। অনিয়মের অভিযোগে সম্প্রতি ২৬৯ জন প্রাথমিক শিক্ষককে চাকরি থেকে বরখাস্ত করার নির্দেশ দিয়েছে কলকাতা হাই কোর্ট। অনেকেই জাল প্রতিবন্ধী সার্টিফিকেট বানিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে চাকরি করছেন বলেও অভিযোগ করছেন কেউ কেউ। এই আবহেই সাহেব সরকার নামে বছর বত্রিশের ওই যুবক জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের দ্বারস্থ হয়েছেন। 

LihatTutupKomentar