নিউজ ডেস্ক: এবার স্কুলের প্রধান শিক্ষকের স্কুলে ঢোকা আটকাতে সশস্ত্র পুলিস বসানোর নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্ট। প্রধান শিক্ষককে শাস্তি দিতে নজিরিহীন রায় দিলেন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
স্কুলের প্রধান শিক্ষেকর বিরুদ্ধে এক শিক্ষক আদালতের দ্বারস্থ হন। অভিযোগ, দুই বছর ধরে বেতন আটকে রাখা হয়েছে। সেই মামলায় বেনজির রায় দিলেন কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়।
বিচারপতি জানান, ১০ জুন পর্যন্ত অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক স্কুলে ঢুকতে পারবেন না। এখানেই শেষ হয়নি! প্রধান শিক্ষক যাতে স্কুলে না ঢুকতে পারে তার জন্য জন্য স্কলের গেটে দু'জন সশস্ত্র পুলিস মোতায়েন থাকবেন। তারা এই নির্দেশ যথাযথ ভাবে পালন করবেন।
প্রধান শিক্ষক বেতন বন্ধ করার পিছনে যুক্তি দেন যে, ইংরেজির শিক্ষক রাজু জানা বিভিন্ন সময় স্কুলে অনুপস্থিত থেকেছেন৷ শো-কজ করা হলেও কোনও জবাব দেননি৷ কিন্তু ইংরেজির শিক্ষকের বক্তব্য, প্রধান শিক্ষক ক্ষমতাবলে বিনা কারণে স্কুলের আরও তিন-চার জনের বেতন বন্ধ রেখেছেন৷
এরপর বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের বেঞ্চে মামলাটি উঠলে তিনি প্রধান শিক্ষককে বলেন, "2018 ডিসেম্বর থেকে 2020 ডিসেম্বর পর্যন্ত সহ-শিক্ষকের মাইনে বন্ধ রাখলেন কেন? স্কুলটা কি আপনার জমিদারি? আপনি বেতন দেন নাকি? আপনারও বেতন বন্ধ করে দেব৷"
এই কথা শুনে সঙ্গে সঙ্গে প্রধান শিক্ষক শেখ সফি আলম হাতজোড় করে বিচারপতির কাছে ক্ষমা চান৷ মাইনে বন্ধ করার জন্য তাঁকে ক্ষমা করা হোক এই আর্জিও জানান তিনি । প্রধান শিক্ষক আদালতে তেমন কোনও নথিও দেখাতে পারেননি, যেখানে তাঁকে সহ-শিক্ষকের বেতন বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয় জেলা স্কুল পরিদর্শকের তরফে। এতএব বৈধ কোনও কারণ ছাড়াই তিনি দু'বছর ধরে মাইনে বন্ধ রাখেন।
এরকম ব্যতিক্রম রায় স্বভাবতই আদালতে হইচই ফেলে দেয়। উত্তর ২৪ পরগনার পুলিস সুপারকে বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় নির্দেশ দেন, অবিলম্বে স্কুলের গেটে দু'জন বন্দুকধারী পুলিস মোতায়েনের। যাতে কোনো অবস্থাতেই ওই প্রধান শিক্ষক স্কুলে ঢুকতে না পারেন।
অভিযুক্ত, উত্তর ২৪ পরগনার শাসনের গোলাবাড়ি পল্লিমঙ্গল বিদ্যামন্দিরের প্রধান শিক্ষক শেখ শফি আলম। তাঁর বিরুদ্ধে দু'বছর বেতন আটকে রাখার অভিযোগ করেন এক শিক্ষক। সেই মামলায় শুক্রবার চূড়ান্ত রায় হল এদিন।