Kode Iklan atau kode lainnya

বঞ্চনা দূর করে নিয়োগের দাবিতে শিক্ষামন্ত্রীর দফতরে স্বারকলিপি জমা কলেজ সার্ভিস কমিশনের মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের

নিউজ ডেস্ক: বিগত কয়েকদিন আগে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মেধা তালিকাভুক্ত অপেক্ষমাণ প্রার্থীদের মেধা তালিকার মেয়াদ বৃদ্ধি করে নিয়োগের বিষয়ে মাননীয় শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু মহাশয় রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার কথা সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন। অথচ ২০১৮ পশ্চিমবঙ্গ কলেজ সার্ভিস কমিশনের (Advt. 1/2018) মেধা তালিকাভুক্তরা তাদের সঙ্গে হওয়া একাধিক বঞ্চনার বিষয়ে রাজ্য সারকারে দৃষ্টি আকর্ষণ করলেও আজও তাদের সমস্যার সমাধান হয়নি।  

২০১৮ সালের নিয়োগ প্রক্রিয়ায় কোনো নিয়ম না মেনে ইন্টারভিউতে ৪০%-এর অধিক নম্বর রেখে যাবতীয় দিক থেকে যারা কম যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থী তাদের অধিকাংশ জনকে নিয়োগ দেওয়া হয়, অথচ অধিক যোগ্যতাসম্পন্ন প্রার্থীরা পড়ে রয়েছেন মেধা তালিকার পিছনের দিকে। কলেজ সার্ভিস কমিশন প্রার্থীদের নামের পাশে তাদের প্রাপ্ত নম্বরেরও উল্লেখ করেনি। যা নিয়ে আরটিআই দপ্তর এবং কলকাতা হাইকোর্টের সিঙ্গেল ও ডিভিশন বেঞ্চ কলেজ সার্ভিস কমিশনকে যাবতীয় নম্বরসহ মেধা তালিকা প্রকাশের নির্দেশ দিলেও কমিশন আজও তা প্রকাশ্যে আনেনি। করোনার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সরকার মেধা তালিকার মেয়াদ বৃদ্ধি করলেও সকল বিষয়ের মেধা তালিকার মেয়াদ বৃদ্ধি সমান ছিল না। এমনকি কিছু বিষয়কে (গণিত, পদার্থবিদ্যা, সংস্কৃত, বাংলা, রসায়ন, ভূগোল) বর্ধিত সময় পাওয়া থেকে সম্পূর্ণভাবে বঞ্চিত করা হয়। 

লক ডাউনের সময়কে বাদ দিয়ে নৃতত্ত্ব, ইতিহাস, দর্শন ১৪ মাস ২ দিন রি-কাউনসিলিং-এর সুযোগ পায়, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ১৩ মাস ৫ দিন। অন্যদিকে গণিত, পদার্থবিদ্যা- ৭ মাস, বাংলা ৬ মাস ২৮ দিন, রসায়ন, ভূগোল- ৬ মাস ২৭ দিন। দিনের হিসেবে যা প্রায় অর্ধেক। অথচ করোনার জন্য কোনো বিষয়েরই রি-কাউনসিলিং করানো সম্ভব হয়নি। অন্যদিকে নিজের নিয়মকে অমান্য করে কলেজ সার্ভিস কমিশন মেধা তালিকা প্রকাশের পর পদ স্যাঙ্কশান করিয়ে, কলেজ থেকে পরবর্তীতে রি-কুইজিশন জমা নিয়ে, বহু জনকে বাড়তি সুবিধা পাই-এ দিয়েছে। কিছু কিছু বিষয়ের ক্ষেত্রে এই নিয়োগ প্রায় ১০০%-এর কাছাকাছি (ইতিহাস, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান)। কিছু কিছু বিষয়ে এই নিয়োগের হার অত্যন্ত নগণ্য। মেধা তালিকায় নাম না থাকা প্রার্থীরাও নিয়োগ পেয়েছেন। ইতিমধ্যে দুর্নীতির বহু তথ্য প্রকাশ্যে এসেছে, কলকাতা হাইকোর্টে শতাধিক মামলাও চলছে কলেজ সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতি ও নিয়োগে পদে পদে নিয়মকে লঙ্ঘন করার বিষয়ে।  

২০১৮ সালের বিজ্ঞপ্তির নিয়োগ প্রক্রিয়াই কলেজ সার্ভিস কমিশন আজও শেষ করেনি। ২০১৮ সালের প্রক্রিয়ায় প্ল্যান প্রটেকশন বিষয়ের আজও ইন্টারভিউ হয়নি, তিনটি বিষয়ের ইন্টারভিউ হলেও এখনও মেধা তালিকা প্রকাশিত হয়নি। অথচ সিএসসি বহু বিষয়ের মেধা তালিকার মেয়াদ থাকাকালীন অবস্থায়, বহু মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থী নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা সত্ত্বেও, তাদের নিয়োগ না করে  ২৪/১২/২০২০ তারিখে নতুন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়।   

পশ্চিমবঙ্গের কলেজগুলির বেশিরভাগ বিভাগে স্থায়ী অধ্যাপক নেই কিংবা কেবলমাত্র একজন বা দু-জন শিক্ষক নিয়ে চলছে। কলেজের তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে সরকারী সাহায্যপ্রাপ্ত কলেজে প্রায় ৩০,০০০ (৬৫%) স্থায়ী অধ্যাপকের পদ শূন্য পড়ে রয়েছে। আরটিআই তথ্য মেধা তালিকাভুক্তদের থেকে স্যাঙ্ক শান হয়েও শূন্য পড়ে থাকা পদের সংখ্যা কয়েক গুণ বেশি। ফলে কলেজ সার্ভিস কমিশনের দুর্নীতি ও বৈষম্যমূলক আচরণের ফলে যাবতীয় যোগ্যতার পরীক্ষা দিয়ে মেধা তালিকাভুক্ত হয়েও যারা নিয়োগ পায়নি তাদের এক প্রতিনিধি দল আজ বিকাশ ভবনে আরও একবার শিক্ষামন্ত্রীর দফতরে ডেপুটেশন জমা দিয়েছে। যাতে যাবতীয় দিক বিচার করে স্কুল সার্ভিস কমিশনের মেধা তালিকাভুক্ত প্রার্থীদের মতো রাজ্য সরকার ২০১৮ কলেজ সার্ভিস কমিশনের মেধা তালিকাভুক্তদের দ্রুত নিয়োগের ব্যবস্থা করেন এবং সকলের প্রতি সমবিচার করেন।                                                

close