Kode Iklan atau kode lainnya

চায়ের দোকানে কাজ করে জীবন যুদ্ধে হার না IAS অফিসার, জানুন অসম্ভবকে সম্ভব করার কাহিনি

নিউজ ডেস্ক: চায়ের দোকানে কাজ করে জীবন যুদ্ধে হার না মেনে হয়েছিলেন IAS অফিসার। আজ আমরা জানব অসম্ভবকে সম্ভব করার কাহিনী। বাড়ি থেকে স্কুলের দূরত্ব ছিল প্রায় ৭০ কিলোমিটার। প্রতিদিন কষ্ট করে যেতেন স্কুলে। ফিরেই হাত লাগাতে হত বাবার চায়ের দোকানের কাজে। সেদিনের সেই ছোট্ট সম্বলহীন ছেলেটাই আজ দেশের আইএএস অফিসার। উত্তরাখণ্ডের হিমাংশু গুপ্তার (IAS Himanshu Gupta) লড়াই ফিল্মি কাহিনিকেও হার মানায়। জীবনে কঠিন পথ পেরিয়ে ইউপিএসসি সিবিল সার্ভিস পরীক্ষায় সফল হয়েছেন হিমাংশু।

অর্থের অভাবে হিমাংশুর মা-বাবা মাঝপথেই স্কুল ছেড়েছিলেন। বাবা চায়ের দোকান চালাতেন। কিন্তু ছেলেমেয়েকে পড়াশুনো করাতে চেয়েছিলেন। তাই কষ্ট করেও ছেলে হিমাংশুকে স্কুলে পাঠান। 'Humans of Bombay' ফেসবুক পেজে নিজের কাহিনি শেয়ার করেছেন হিমাংশু। তিনি জানিয়েছেন,''স্কুলে যাওয়ার আগে, ছুটির পর বাবার সঙ্গে চায়ের দোকানে কাজ করতাম। সহপাঠীদের সঙ্গে একই ভ্যানে যেতাম। বাবার চায়ের দোকানের কাছে কখনও ওরা আসলে লুকিয়ে পড়তাম। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। একবার একজন দেখে ফেলেছিল। তার পর আমাকে নিয়ে মস্করা করত। চাওয়ালা বলে টিটকিরি দিত। কিন্তু সেই সব নিয়ে ভাবিনি। বরং মনোনিবেশ করেছিলাম পড়াশুনোয়। বাবাকে কাজে সাহায্য করেছি। সবাই মিলে মাসে ৪০০ টাকার মতো কামিয়ে ফেলতাম।”   

তিনি যে ইংরেজিতে একেবারেই দক্ষ ছিলেন না তাও জানিয়েছেন। হিমাংশু জানান,''বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। শহরে থাকতে চাইতাম। পরিবারকে ভাল রাখার ইচ্ছে ছিল। বাবা প্রায় বলতেন, স্বপ্নপূরণের জন্য ভাল করে পড়াশুনো করা জরুরি। সেটাই করেছিলাম। ইংরেজিতে সড়গড় ছিলাম না। তাই ইংরেজি সিনেমার ডিভিডি কিনে দেখতাম। ২জি মোবাইলে কলেজের খোঁজ করেছি। ভর্তির আবেদন করেছি ওই মোবাইলের মাধ্যমেই। বোর্ডের পরীক্ষায় ভাল নম্বর আসায় হিন্দু কলেজে সুযোগ পাই। উচ্চশিক্ষা নিয়ে কিছুই জানতেন না মা-বাবা। তাও সাহস জুগিয়ে বলেছিলেন,'তোর ইচ্ছেশক্তিতে ভরসা রয়েছে।''  

কলেজের মাইনেও নিজেই দিয়েছিলেন হিমাংশু। তাঁর কথায়,''মা-বাবার বোঝা হতে চাইনি। টিউশন করেছি। ব্লগ লিখেছি। সেই টাকায় পড়াশুনো চালিয়ে গিয়েছিলাম। ৩ বছর পর পরিবারের প্রথম স্নাতক পাশ করা সদস্য হয়েছিলাম আমিই। তার পর বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রথম হই। বিদেশ থেকে পিএইচডি করার জন্য বৃত্তি পেলাম। কিন্তু যাইনি। কারণ পরিবারকে ছেড়ে থাকতে পারব না। এটা ঝুঁকির সিদ্ধান্ত ছিল। সিবিল সার্ভিসের প্রস্তুতি নিতে শুরু করলাম।''  

প্রথমবার ইউপিএসসি দিয়ে পাশ করতে পারেননি হিমাংশু। কিন্তু আশা ছাড়েননি। আইএএস হতেই হবে তাঁকে। আরও তিনবার চেষ্টা করেন। মেইন পরীক্ষায় পাশ করলেও ক্রমতালিকায় আসতে পারছিলেন না। শেষপর্যন্ত চতুর্থবারের চেষ্টায় আইএএস অফিসার হন হিমাংশু। তাঁর কথায়,''মা বলেছিল, আজ আমাদের সুনাম আরও বাড়িয়ে দিয়েছো তুমি।'' নিজের প্রথম মাইনে মা-বাবাকে দেওয়ার স্মৃতিও ভুলতে পারেননি হিমাংশু। 

২০১৮ সালে প্রথমবার ইউপিএসসি পরীক্ষা দিয়েছিলেন হিমাংশু। তখন রেলওয়েতে তাঁকে নির্বাচিত করা হয়েছিল। ২০১৯ সালে ফের পরীক্ষা দেন। ভারতীয় পুলিশ সেবায় সুযোগ পান। তৃতীয়বার ২০২০ সালে আর নিরাশ হননি। আইএএস হয়ে নিজের স্বপ্নপূরণ করেন হিমাংশু।  

তথ্যসূত্র: Aajtak Bangla 

close