Kode Iklan atau kode lainnya

ক্লাসরুম শিক্ষা চালু করার দাবিতে পথে নামছেন শিক্ষকেরা, দলমত নির্বিশেষে সামিল হওয়ার আবেদন

নিউজ ডেস্ক: করোনার বাড়বাড়ন্তের কারণে সমস্ত স্কুল-কলেজ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাভাবিক পঠন-পাঠন বন্ধ করেছে রাজ্য সরকার। যদিও স্কুল খোলার পক্ষে শিক্ষক এবং অভিভাবকদের একাংশ।  দীর্ঘ সময় ধরে স্কুল কলেজ বন্ধ হয়ে গিয়েছে। এর অত্যন্ত খারাপ প্রভাব পড়ছে পড়ুয়াদের ওপর বলেই দাবি বিশেষজ্ঞদের। করোনা আবহে স্কুলে উঁচু ক্লাস এবং কলেজের পঠন-পাঠন কিছুদিন শুরু হলেও তা আবার বন্ধ হয়ে গিয়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউয়ের ধাক্কায়। 

এই অবস্থায় সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পঠন-পাঠন শুরুর দাবিতে পথে নামতে চলেছেন শিক্ষকরা। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পঠন-পাঠন শুরুর দাবিতে বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দেওয়া হল। সমস্ত অভিভাবক, শিক্ষক, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গকে এই কর্মসূচিতে এগিয়ে আসার অনুরোধ জানানো হয়েছে। আগামী ২৫ জানুয়ারী, মঙ্গলবার, দুপুর ১২ টায় কলকাতার সল্টলেকের করুনাময়ী বাস স্ট্যান্ড থেকে জমায়েত শুরু হবে। 

এই বিষয়ে শিক্ষক-শিক্ষাকর্মী-শিক্ষানুরাগী ঐক্যমঞ্চের রাজ্য কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, “আপনারা সকলেই আজ গভীরভাবে উপলব্ধি করতে পেরেছেন করোনা পরিস্থিতি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে শিক্ষাব্যবস্থাকে। প্রায় দু' বছর পঠন পাঠনের মাধ্যমে যথাযথ মূল্যায়ন ব্যতিরেকে ছাত্র-ছাত্রীগণ উচ্চ শ্রেণিতে উন্নীত হয়েছে। যার ফলে শিক্ষার গুণগতমান একেবারে তলানিতে। বর্তমানে যখন করোনা ভাইরাসের আক্রমনাত্মক ক্ষমতা হ্রাস পেয়েছে তখন গঙ্গাসাগর মেলা, পৌরসভা নির্বাচন, বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠান, অন্যান্য সর্বক্ষেত্র যখন প্রায় স্বাভাবিক তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে পঠন-পাঠন সম্পূর্ণ স্তব্ধ করে রাখা হয়েছে। এই অবস্থায় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার আধিকারিকদের বক্তব্য, এই ভাইরাস ছোটদের উপর তেমনভাবে প্রভাব ফেলতে পারে না। এমনকি বিশ্ব ব্যাংকের অধিকর্তা মত প্রকাশ করে জানিয়েছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পঠন-পাঠন বন্ধ করার কোন মানে নেই। এই অবস্থায় আমরা রাজ্য সরকার তথা শিক্ষা দপ্তরের কাছে জোরালোভাবে দাবি তুলে ধরছি যে, আগামী ১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, থেকে রাজ্যের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে(সর্বনিম্ন স্তর থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত) পঠন-পাঠন শুরু করা হোক। আমরা এও দাবি করছি, যতদিন না সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অফলাইনে পঠন-পাঠন শুরু হচ্ছে ততদিন কোন ধরনের ভোট, মেলা, অনুষ্ঠান চালু করা চলবে না। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে সবার প্রথম পঠন-পাঠন শুরু হোক। তারপর অন্য সবকিছু। কোনভাবেই শিক্ষার মতো এত বড় একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় ধ্বংস করে দেওয়া চলে না।  

দুরাভাষ, টেলিভিশন, অনলাইন শিক্ষা, কোনোটিই যে আজ শ্রেণি শিখনের বিকল্প নয়, তা দিনের আলোয় মতো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। আপনারা তা সবাই উপলব্ধি করতে পেরেছেন। আসুন, আমরা সম্মিলিতভাবে দলমত নির্বিশেষে সরকারের কাছে এই দাবি জোরালো ভাবে তুলে ধরি এবং অতি দ্রুত যাতে সমস্ত ধরনের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অফলাইনে পঠন-পাঠন শুরু হয় তার জন্য বাধ্য করি সরকারকে। আমরা শিক্ষক, অভিভাবক, শিক্ষানুরাগী ব্যক্তিবর্গ এখনো যদি এর গুরুত্ব উপলব্ধি না করে রাস্তায় নামতে না পারি তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ধ্বংস হয়ে যাবে। আমরা তা কোনোভাবেই হতে দিতে পারি না। প্রতিটি জেলায় ডিএম এবং ডিআই দপ্তরে এই দাবীতে সোচ্চার হোন। আসুন সমবেতভাবে জোরের সাথে দাবি তুলে ধরি-

ক্লাসরুম শিক্ষা চালু করো।

দূরাভাষ-টেলিভিশন নয়, ক্লাসরুম চাই।

অনলাইন শিক্ষা নয়, ক্লাসরুম শিক্ষা চালু করো।

যতদিন না অফলাইন পঠন-পাঠন শুরু হচ্ছে, ততদিন সমস্ত ধরনের ভোট, মেলা, অনুষ্ঠান চালু করা চলবে না।

আগে শ্রেণি শিখন চালু, তারপরে ভোট।

আগে শ্রেণি শিখন, তারপর মেলা, অনুষ্ঠান।

সব চালু রেখে কেবল শ্রেণি পঠন বন্ধ কেন?

রাজ্যের সমস্ত শিক্ষক, শিক্ষানুরাগী সংগঠনের কাছে আমাদের অনুরোধ, আপনারাও আসুন এবং এই কর্মসূচিতে দলমত নির্বিশেষে সামিল হোন।”

close