Kode Iklan atau kode lainnya

বিধায়ক হিসেবে প্রাপ্য বেতন থেকে রাস্তাঘাট মেরামত, পানীয় জলের সংকট দূর করব: চন্দনা বাউড়ি

 

নিউজ ডেস্ক: বিধানসভা ভোটে রাজ্যে পর্যদুস্থ হয়েছে গেরুয়া শিবির। তাঁর মধ্যেই বিজেপির (bjp) পক্ষ থেকে জয়লাভ করে বাঁকুড়ার শালতোড়ার (saltora) চন্দনা বাউড়ি (Chandana Bauri) সবার নজর কেড়েছেন। নির্বাচনে জয়লাভ করে বিধায়ক হওয়ার পর প্রথমবারের জন্য বিধানসভা গিয়েছিলেন শপথ নেওয়ার পর থেকে করোনা আবহে আর যাওয়া হয়নি। ফলে একজন বিধায়ক হিসেবে ঠিক কত টাকা মাইনে পাবেন, তা জানা হয়নি চন্দনার। তবে জানার পর তিনি অবাক হলেন। 

এবারের গ্ল্যামারের চাকচিক্যের মধ্যেই বাঁকুড়ার শালতোড়া বিধানসভা কেন্দ্রে অতি দরিদ্র সাধারণ এক গৃহবধূ চন্দনা বাউড়ির জয় বিজেপি শীর্ষ নেতৃত্বকে কিছুটা গর্বের স্পর্শ দিয়েছে।বাঁকুড়া শালতোড়া কেন্দ্রের বিজেপি প্রার্থী চন্দনা বাউড়ি। দিনমজুর স্বামী, দুই সন্তানের মা এই গৃহবধূ তাদের টানাটানির সংসারে ভীষণভাবে লড়াইয়ের মধ্য দিয়ে দিন অতিবাহিত করেন। তাকেই এবারের নির্বাচনে লড়ার টিকিট দিয়েছিল বিজেপি।

প্রার্থী হওয়ার সময় নির্বাচন কমিশনে যে হলফনামা তিনি জমা দিয়েছিলেন তাতে ৩২ হাজার টাকার মতো নগদ ছাড়া আর কিছুই সম্পত্তি নেই বলে জানিয়েছিলেন চন্দনা। শপথ নিতে এসে বিধানসভা সচিবালয় থেকে জানতে পেরেছিলেন, ১৫ মে-র পরে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলতে হবে। নিময় অনুযায়ী কলকাতায় স্টেট ব্যাঙ্কের নির্দিষ্ট শাখাতেই বিধায়কদের বেতন-অ্যাকাউন্ট হয়। কিন্তু লকডাউন চালু হয়ে যাওয়ায় চন্দনার আর কলকাতায় আসাই হয়নি।

এক সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথোপকথনে বিধায়ক চন্দনা বাউড়ি জানালেন, বিধায়ক হিসেবে মাসে কত টাকা মাইনে পাবেন তা এখনও পর্যন্ত তিনি জানেন না। সাংবাদিকের কাছে ঘুরিয়েই তিনি প্রশ্ন করেন, ‘কত টাকা মাইনে পাব?’ সাংবাদিক জানান- মাসে প্রায় ৮২ হাজার টাকা পান একজন বিধায়ক। তবে শপথ নেওয়ার দিন থেকে শুরু করে যদি জুন মাসের মধ্যে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়ে যায়, তাহলে প্রায় ১ লক্ষেরও বেশি টাকা পাবেন তিনি। আর তা শুনেই আকাশ থেকে পড়েন চন্দনা বাউড়ি।

এত টাকা মাস মাইনে শোনার পর চন্দনা বাউড়ি বলেন, ‘কি করব তা এখন ভাবতে পারছি না। তবে মানুষের যাতে ভালো হয়, এমন কিছু করব। অত টাকা তো আর আমাদের লাগবে না, তাই মানুষের কাজে লাগাব। আমার গাড়ির দরকার নেই। অনেক দাম। স্বামীর মোটর সাইকেল আছে তো, ওতেই হয়ে যাবে’।

চন্দনা বাউড়ি জানিয়েছেন, “বিধায়ক হিসাবে প্রাপ্য টাকার বেশীরভাগ অংশ খরচ করব অসহায়, দুঃস্থ মানুষদের জন্য। এত টাকা আমাদের কাজে লাগবে না। আমরা সাধারণভাবে জীবন যাপনে অভ্যস্ত। আমার গাড়ির দরকার নেই, আমার সাইকেল আছে, স্বামীর মোটরসাইকেল আছে ওতেই আমাদের চলে যাবে। টিভি কেনার বা বাড়ি বানানোর বর্তমানে আমার কোন ইচ্ছা নেই। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি বানানোর টাকা পেয়েছি ওতেই আমি বাড়ি বানাবো। ‌ অত টাকা আমার প্রয়োজন নেই বরং ওই টাকা দিয়ে আমি আমাদের এখানে রাস্তাঘাট মেরামত করব, পানীয় জলের সংকট দূর করব। আমার ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া শেখাবো। শুভেন্দু অধিকারী একজন ভালো জননেতা। ‌ উনার উপর আমার খুবই ভরসা রয়েছে। আমার বেতনের টাকা কিভাবে খরচ করব, উনার থেকে এই বিষয়ে পরামর্শ নেব।”

বিজেপির অনেক তারকা প্রার্থী হেরে গেলেও জিতেছেন চন্দনা। বহুবার সংবাদ শিরোনামে উঠে এসেছেন রাজ্যের সর্বাধিক দরিদ্র প্রার্থী চন্দনার নাম। প্রথম থেকেই যেভাবে তিনি প্রচারে ঝড় তুলেছিলেন, তা নজরকাড়ার মত ছিল। ভোটের ফলে দেখা যায়, পান্তা খেয়ে দিন-রাত পাড়ায় পাড়ায় প্রচার করা মেয়েকেই পছন্দ করেছে শালতোড়ার মানুষ।

close